সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ লকডাউন চলাকালে সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখা, প্রয়োজন ছাড়া অযথা ঘোরাফেরা এবং মুখে মাস্ক না থাকায় গত ৩ দিনে ২৫ জনের ৩৪ হাজার ৩০০ টাকা অর্থদণ্ড এবং ২৫ জনকে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রমিজ আলম গত বৃহস্পতিবার শুক্রবার ও আজ শনিবার সৈয়দপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওইসব দ্বন্ড দেন।
জানা যায়, আজ সকালে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে লকডাউনের মাঝেও বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হয়ে বাজারে, সড়কে, রেললাইনেসহ বিভিন্ন জায়গায় অহেতুক ঘোরাফেরা করা এবং জটলা করে দাঁড়ানোর কারনে শনিবার (৩ জুলাই) সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে আটক করা হয়। পরে দুপুর ২ টায় শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে পুলিশ বক্সে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আটককৃতদের প্রত্যেককে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।
এছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখাসহ মুখে মাস্ক না থাকায় শুক্রবার ৬ জনের ১৮ হাজার ২০০ টাকা অর্থদণ্ড করেন এবং মোটর সাইকেল চালিয়ে অপ্রয়োজনে বার বার যাতায়াত করার দায়ে একজনকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ১৯ জনের ১৬ হাজার ২০০ টাকা করা জরিমানা হয়।
এসব অভিযানকালে সরকারি নির্দেশনা অমান্য না করার জন্য সকলকে সতর্ক করা হয়। অভিযানে থানা পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হলে প্রথম দিন সৈয়দপুরে ঢিলেঢালা ভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রশাসন। ফলে বৃহস্পতিবার গণ পরিবহণ ছাড়া প্রায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এসময় নতুন করে দেয়া লকডাউন কেমন চলছে তা দেখতে কৌতুহলী মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
শুক্রবার এ চিত্র কিছুটা পরিবর্তিত হলেও শনিবার সকাল থেকে শহরে মানুষের ঢল নামে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল সৈয়দপুরে যেন লকডাউন নাই। দোকান পাট যেমন প্রায় সবই খোলা তেমনি ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মত। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই জনসমাগমের আধিক্য চরম আকার ধারণ করে।
এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব দৃশ্য তুলে ধরে শুরু হয় নানা সমালোচনা। সচেতন মহল ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকেও প্রশাসনের প্রতি চাপ সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় দুপুর ২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত ব্যাপক অভিযানে নামে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে থানা ও ট্রাফিক পুলিশ।