ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: গত কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ইতিমধ্যে নদের তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ফুলছড়ি উপজেলার সাত ইউনিয়নেই বন্যা ও নদী ভাঙন দেখা দেয়। নদী ভাঙনে সর্বহারা হয় নদী পাড়ের মানুষগুলো। প্রকৃতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় তাদের। প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির কারণে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা থেকে উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্থানে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে বাড়ি-ঘর, গাছপালা ও আবাদী জমি। সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে, উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা, ভুষিরভিটা, রতনপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারী, গলনা ও জিয়াডাঙ্গা গ্রামে। এছাড়াও ফুলছড়ি, ফজলুপুর ও এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এ এলাকায় ভাঙনের গতি বেড়েই চলছে। বাড়ি ঘর, গাছ কেটে নিয়ে এলাকা ছাড়ছেন নদী পাড়ের মানুষ। কেউ বা আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন উঁচু বাঁধে। এলাকার ভাঙন রোধের কাজ শুরু না হওয়ায়, চরম আতঙ্কে কাটছে প্রতিটা মুহূর্ত। ভাঙনের শিকার লোকজনের অভিযোগ, এলাকায় ব্যাপকভাবে নদী ভাঙন দেখা দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসনের কোন ব্যক্তি পরিদর্শনে আসেননি।
উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা গ্রামের গোলাপি বেগম (৫৫) বলেন, “বন্যার কারনে ২২ বার ঘর ভাঙন দিছি। এবছর ভাঙলে কোনে যামু, কোথাও যাওয়ার জায়গা নাই। সারারাত ঘুম ধরেনা, সবসময় ভয়ে আতঙ্কে থাকি এই বুঝি বাড়ি ভাইঙ্গা পরে নদীতে। ভয়ে খাইতে পারি না, আমাগো দুঃখের কেউ খোঁজ নিতে আসেনা।”
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় উপ-প্রকৌশলী এ.টি.এম রেজাউর রহমান জানান, উড়িয়ার কটিয়ারভিটা থেকে ভূষিরভিটা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ৬৫০ মিটার এলাকা ভাঙনরোধে কাজ করা হবে। ইতিমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ওই এলাকায় ৬৫ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। আবহাওয়া ভালো হইলে দূত কাজ শুরু করা হবে তিনি জানান।