1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ পূর্বাহ্ন

বিএনপির জোট রাজনীতি অনেকটা পথহারা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১
বিএনপির জোট রাজনীতি অনেকটা পথহারা
বিএনপির লোগো
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত বিএনপি দল গোছানোতে ব্যস্ত। ২০১৪ সাল থেকে দলটির নেতারা বলে আসছেন, দল গুছিয়ে তাঁরা আবার আন্দোলনে নামবেন। মাঝে ২০১৬ সালে দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয়, এরপর দল পুনর্গঠনে দায়িত্ব বদল হয় তিনবার। আদতে কিছুই হয়নি। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে দলের ৮১টি সাংগঠনিক ইউনিটের মধ্যে ৪৭টিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা গেছে। ৩৩টিতে এখনো আহ্বায়ক কমিটি ও আংশিক কমিটি রয়ে গেছে, যেগুলোর সব কটিই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে অনেক আগে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম  বলেন, করোনার সংক্রমণ ও লকডাউন পরিস্থিতি দল পুনর্গঠন কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলেছে।

নিষ্ক্রিয় ঐক্যফ্রন্ট

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর শুরুর দিকেসংগঠনের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ অন্য নেতারা অংশ নিতেন। একপর্যায়ে বিএনপির নেতারা বৈঠকে অংশ নেওয়া বন্ধ করে দেন। করোনা মহামারির পর থেকে ঐক্যফ্রন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।

এ জন্য ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের অনেকে বিএনপিকে দোষারোপ করেন। তাঁদের অভিযোগ, বিএনপি একলাই পথ চলতে চাইছে। জোটবদ্ধ আন্দোলনের ব্যাপারে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে বিভ্রান্তি আছে। তাঁদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ভয়ে হোক, অন্য কোনো আশঙ্কা থেকে হোক, রাজপথের আন্দোলনে বিএনপি এখনো অনাগ্রহী।

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাস্তবতা এবং মানুষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে এ জায়গায় আসতে হবে। যদি কেউ মনে করে এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করবে, তাহলে তারা আরেকটি ভুল করবে।’ মান্নার মতে, জোটবদ্ধ বৃহৎ আন্দোলন সময়ের দাবি। তার মানে এই নয় যে সবাইকে এক মঞ্চে আসতে হবে। আলাদা থেকেও যুগপৎ আন্দোলন করা যেতে পারে।

গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এখন কারোরই মাঠের কর্মসূচি নেই। এ সময়টাতে সবাই দল গোছানোর দিকে জোর দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আরও বৃহৎ আকারে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করছি।’

বিএনপির পুরোনো জোট ২০-দলীয় ঐক্যজোটের বৈঠক হয় না অনেক দিন ধরে। ইতিমধ্যে ২০–দলীয় জোট ছেড়ে গেছে পাঁচটি দল। ভেঙে গেছে জোটের সাতটি শরিক দল। তবে সব দলেরই ভাঙা একটি অংশ জোটে আছে। ফলে এমনও হয়েছে, এক দলের দুই অংশের শীর্ষস্থানীয় নেতাই জোটের বৈঠকে উপস্থিত হয়েছেন। তখন এক অংশের নেতাকে দেখে আরেক অংশের নেতা বৈঠক ছেড়ে চলে গেছেন।

জোটের তিন শরিক দল জামায়াতে ইসলামী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও কল্যাণ পার্টি অনেক দিন ধরেই জোটে নিষ্ক্রিয়। এই তিন দল নিয়ে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন রয়েছে বিএনপির ভেতরে–বাইরে। জামায়াতকে এড়িয়ে চলতে চাইছে বিএনপি। টের পেয়ে জামায়াতেরও আলগা আলগা ভাব। এরই মধ্যে জামায়াত, অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি ও সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টির মধ্যে ভালো সখ্য হয়েছে। তারা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির জোট গঠন পছন্দ করেনি। এ নিয়ে নির্বাচনের আগে-পরে প্রতিক্রিয়া দেখান অলি আহমদসহ অনেকে।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নানা হিসাব-নিকাশ থেকে ২০-দলীয় জোটের বাইরে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম লক্ষ্য ছিল ভোটের মাঠে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে জাগরণ সৃষ্টি করা। পাশাপাশি জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গাঁটছড়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে যে নেতিবাচক ধারণা, সেটি কাটানোও একটা লক্ষ্য ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জোট গঠনে বিএনপি সফল হলেও এর উদ্দেশ্য সফল হয়নি। নতুন জোট ঐক্যফ্রন্টের নামেই বিএনপি ও ২০ দল ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়। ২০ দলকে ৪০টি আসন এবং ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি আসনে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। কিন্তু পুরো জোটে বিএনপি পায় ৬টি আসন এবং গণফোরাম পায় ২টি আসন।

অবশ্য এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দলের প্রধান মুক্ত নন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান দেশের বাইরে—এ রকম একটা পরিস্থিতিতেও দল ঐক্যবদ্ধ। দুটি ভিন্ন মেরুর জোটকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটি নির্বাচনও করেছি। মানুষ ভোট দিতে পারলে ফলাফল কী হতো সবাই জানে। এসব ছোট করে দেখার উপায় নেই।’

ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘জোটকে অ্যাকটিভ করার জন্য আমরা গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছি। আমরা সবাইকে নিয়ে আরও বৃহত্তর জোট গড়ার জন্য কাজ করছি।’

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি