গাজীপুর প্রতিনিধি : লকডাউন ! এই নামটার মানে হয়তো অনেকেই জানেন না। করোনা পরিস্থিতি না হলে এই শব্দটার সাথে কেউ পরিচিতও হতো না হয়তো। হরতাল যেমন এক সময় দাবি আদায়ের জন্য শুরু হলেও তা আস্তে আস্তে রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের হাতিয়ার হয়ে দারিয়েছিলো এবং আছে। ঠিক তেমনি লকডাউন প্রথম প্রথম কিছুটা স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দিলেও এখন গরিব ও নিন্মবিত্তের জন্য ফাসির মঞ্চ হয়ে দাড়িয়েছে। সর্বশেষ ৪ জুলাই মুন্সিগঞ্জের দিনমজুর দ্বীন ইসলাম তার বলি হলেন। লকডাউনে কাজকর্ম করতে না পেরে সন্তান, বৌ, মার মুখে খাবার দিতে না পেরে লজ্জায় ঘৃনায় নিজের জীবনকে শেষ করে দিয়েছেন।
লকডাউন এখন সকলের কাছেই অভিশাপের মতো বলে মনে করছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষজন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঠেকাতে ১ লা জুলাই হতে ৭ দিনের শাট ডাউন ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু তার সাথে আরো ৭ দিন যোগ হয়ে সেটা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বারানো হয়েছে। সারাদেই হঠাৎ করোনায় মৃত্যুর ভয়াবহতা বেরেছে তাই মোট ১৪ দিনের শাটডাউন দেয়া হয়েছে।কিন্তু সাধারণ মানুষদের জীবন জীবিকার কি কোন কিছু হয়েছে?? তারা কি পাচ্ছে সরকারিন,বেসরকারি বা ব্যাক্তি উদ্যোগে কোন সাহায্য সহযোগিতা?
নানান জায়গায় অনেক লোকের সাথে আলোচনা করে জানা গেলো তেমন সাহায্য সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন না। এক সাথে লোক জড়োও হতে পারছেন না। ঘরে খাবার নেই টাকা নেই। অনেকে না খেয়ে আছেন কয়েক দিন ধরে। দৈনিক দিনমজুর যারা তারাও কর্মহীন ফলে মানবেতর জীবন পার করছেন তারা। ঢাকা শহর সহ সমস্ত জেলাতেই গরীব খেটে খাওয়া মানুষদের প্রধান কর্মের মধ্যে একটি হলো রিক্সা বা অটো। কিন্তু তারাও রাস্তায় বের হতে পারছেন না। পুলিশ তাদের দ্বায়িত্বের বাঁধনে হোক আর ক্ষমতার মোহে হোক চালাচ্ছেন অমানুষিক নির্যাতন। তাদের মিটার বাক্স ভেঙ্গে ফেলছেন। টায়ার কেটে দিচ্ছেন, গদি নিয়ে যাচ্ছেন, তাদের গায়ে হাত তোলছেন। আবাট কখনও কখনও দেখা যায় কিস্তির টাকায় কিনা গাড়ি থানায় নিয়ে যাচ্ছেন অথবা বোলড্রোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু ঠিকই রাস্তা কাঁপিয়ে বেরাচ্ছে বড়লোকদের সাইনবোর্ড। গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি খোলা রেখে গাড়ি বন্ধ। হয়রানির সাথে ১০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। তাহলে মাস শেষে কয়টাকা বেতন পাবে আর কয়টাকা খরচ করবে? প্রশ্নের উওর জানা নাই। বিভিন্ন খোলা স্হানে বা রেলক্রসিং এ সকালে দেখা মিলে পাতি কোদাল নিয়ে বসে আছেন দিনমজুররা। কিন্তু কাজ নাই ফলে খাবার নাই। দেখা যাচুনা রাজনৈতিক কোন নেতাদের এান বিতরন কর্মসূচি। আবার মধ্যবিত্তরা আছেন লোক লজ্জার ভয়ে। কারন ভাইরালের যুগে কেউ সহায়তা নিতে গিয়ে সেই ছবি স্যোসাল মিডিয়া বা পএ পএিকায় দেখতে চায় না।
সাধারণ লোকজন বলছেন করোনায় চেয়েও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট ও হাহাকার। না খেতে পারা । তাই সকলের দাবি লকডাউন হয়তো ভালোর জন্য দিয়েছেন সরকার কিন্তু পেটে খাবার না থাকলে কে মানবে এই লকডাউন। সুষ্ঠ ভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে নয়তো পরিস্থিতি সামনে আরো কঠিন রুপ নিবে সব কিছু মিলিয়ে।