কুমিল্লার সংসদ সদস্য সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
৭৪ বছর বয়সী আলী আশরাফ গত নয় দিন ধরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ‘লাইফ সাপোর্টে’ ছিলেন। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে তার একান্ত সচিব আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার জানান।
কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ ছিলেন সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। এ নিয়ে পঞ্চমবার তিনি জাতীয় সংসদে কুমিল্লার ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।
কুদ্দুস হাওলাদার জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন আলী আশরাফ। তার ডায়াবেটিসও ছিল। পিত্তথলির সংক্রমণ নিয়ে গত ১০ জুলাই তিনি স্কয়ার হাসপাতাল ভর্তি হন। এর মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তার অবস্থার অবনতি হয়।
১৩ জুলাই তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পর ২১ জুলাই নেওয়া হয় ‘লাইফ সাপোর্টে’। সেখান থেকে তিনি আর ফিরলেন না।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “অধ্যাপক আলী আশরাফের পেশদারিত্ব এবং অভিজ্ঞতা সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। সরকারি প্রতিশ্রুতি এবং সরকারি হিসাব কমিটিসহ বিভিন্ন সংসদীয় কমিটি এবং সংসদীয় কার্যক্রমে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
“অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ানকে হারালো। তার মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
২০০১ সালে সাবেক স্পিকার হুময়ুর রশীদ মৃত্যুর পর বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ডেপুটি স্পিকার থেকে স্পিকারের দায়িত্বে পান। ওই সময় ডেপুটি স্পিকারের চেয়ারে বসেন আলী আশরাফ।
তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন এক সময়।
১৯৪৭ সালে কুমিল্লার চান্দিনার গল্লাই গ্রামে আলী আশরাফের জন্ম। এক সময় কলেজে অধ্যাপনা করা আলী আশরাফ ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ছিলেন।
একান্ত সচিব আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার জানান, শুক্রবার এশার নামাজের পর গুলশানের আজাদ মসজিদে আলী আশরাফের জানাজা হবে। পরে নিজের এলাকা কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হবে তার মরদেহ।
এক পুত্র ও চার কন্যা সন্তান রেখে গেছেন অধ্যাপক আলী আশরাফ।