মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাওয়ার সময় একটি রো রো ফেরি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দিয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামের ওই ফেরিটি সোমবার সন্ধ্যায় পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে ফেরিতে থাকা একটি বাসে আগুন ধরে যায়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের ম্যানেজার শাফায়েত আহমেদ বিষয়টি জানিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ফেরি শাহজালালের চালক আব্দুর রহমান জানান, ফেরির ইলেকট্রনিক সার্কিট ব্রেকার পড়ে যাওয়ায় স্টিয়ারিং বিকল হয়ে যায়। তবে দ্রুত ঠিক হলেও এর আগেই প্রবল স্রোতে ফেরটির সামনের অংশ পদ্মা সেতুর খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান যাত্রীরা। আঘাতটি পানির লেভেলের নিচে হলে ফেরিটি ডুবে যেতে পারতো।
এর আগে ২৩ জুলাই নির্মাণাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ‘শাহজালাল’ নামের একটি রো রো ফেরির সংঘর্ষ হয়। এতে ফেরিটির অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। ঘটনার পরপরই ফেরির ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আব্দুর রহমানকে বরখাস্ত করে বিআইডব্লিউটিসি।
ঘটনা তদন্তে ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিআইডব্লিউটিসি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (বাণিজ্যিক) এস এম আশিকুজ্জামানকে। অপর তিন সদস্য হলেন বিআইডব্লিটিসির এজিএম (মেরিন) আহমেদ আলী, এজিএম (প্রকৌশল) রুবেলুজ্জামান এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক মো. শাহজাহান।
১০ কার্যদিবসের মধ্যে নৌসচিবের কাছে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয় কমিটিকে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার মেয়াদের আগেই আবারও এ ধরনের ঘটনা ঘটল।
ওই তদন্ত কমিটির কার্যপরিধিও ঠিক করে দেয় মন্ত্রণালয়। বলা হয়, ফেরি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, ফেরি নিরাপত্তাসংক্রান্ত পর্যালোচনা (ভেসেল ট্র্যাকিং সিস্টেম- ভিটিএস এবং রেডিও সিস্টেমের কার্যকারিতা পরীক্ষাসহ), ফেরি পরিচালনার ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন, ফেরি মেরামত, ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও ব্যয়ের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে মতামত দিতে হবে কমিটিকে।
এ ছাড়া ফেরির মাস্টার ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং নিয়োগ-প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা এবং নিরাপদ ফেরি পরিচালনার জন্য দিকনির্দেশনামূলক প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হবে কমিটিকে।