মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতা নিয়ে শুরু হলো নতুন অর্থবছর। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এর অর্থ হলো, ২০২০ সালের জুলাই মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, ২০২১ সালের জুলাইয়ে সেই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৫ টাকা ৩৬ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর গত বছরের জুলাইয়ে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে খাদ্য এবং খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতেই মূল্যস্ফীতি কমেছে, এটা একটি ভালো খবর। সাধারণত দেখা যায়, কোনো মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়লে, খাদ্যবহির্ভূত খাতে কমে। আবার খাদ্যবহির্ভূত খাতে বাড়লে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে। কিন্তু এবার দুই ক্ষেত্রেই কমেছে।’
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে এই লক্ষ্য ধরা ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছর শেষ হয় ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে। অর্থাৎ বাজেটের লক্ষ্যের চেয়ে খানিকটা বেশি ছিল গড় মূল্যস্ফীতি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে দেখা যায়, জুলাই মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ।
আগের মাস জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
জুলাই মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। জুনে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। জুলাইয়ে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশ। জুন মাসে হয়েছিল ৫ দশমিক ২৯ ভাগ।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই মাসে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
এই মাসে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ০১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যালোচনায় বিবিএস বলেছে, জুন মাসের তুলনায় জুলাইয়ে চাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম এবং সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। অন্যদিকে মসলা জাতীয় পণ্য-পেঁয়াজ, আদা, রসুন, এলাচ, দারুচিনি ও জিরার দাম বেড়েছে।
এছাড়া আটা, ময়দা, চিনি, লবণ, নুডুলস এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্য পোশাক ও ওষুধের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিএস।