জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।আইনমন্ত্রী বলেন, এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে জিয়াউর রহমান এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন যখন এ মামলার তদন্ত হয়, তখন তাকে আসামি করা হয়নি কেন? আপনারা জানেন জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে তারই… ইয়েদের মারফত হত্যাকৃত হয়েছে। সেখানে তিনি যখন মৃত তাকে আর আসামি করার কোনো সুযোগ নেই।তিনি বলেন, আমাদের আইনে মরণোত্তর সাজা দেয়ার কোনো বিধান নেই। সেজন্য আইনের বাইরে গিয়ে আমরা শুধু তামাশা করার জন্য একজনকে সাজা দেব না। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান জড়িত এবং সেটার যে সাক্ষ্য-প্রমাণ ইনশাআল্লাহ এই কমিশনের (বঙ্গবন্ধুর খুনের সঙ্গে জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করার লক্ষ্যে গঠন করা কমিশন) মাধ্যমে, সেটা জনসম্মুখে আমরা উপস্থান করবো।আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনের দায়ে যারা সর্বোচ্চ আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত, যাদের ব্যাপারে এখনো এ রায় কার্যকর করা যায়নি তারা পলাতক থাকার কারণে এবং দুজন দুটি দেশে থাকার কারণে, তাদের ফিরিয়ে এনে এ রায় কার্যকর করার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর।‘সরকার নয়, আওয়ামী লীগ যতক্ষণ থাকবে, আমার মনে হয় বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর অনুসারী একজন থাকলেও এ হত্যাকারীদের ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হবে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের যে চলমান প্রক্রিয়া তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সেটা অব্যাহত আছে’ বলেন আইনমন্ত্রী।তিনি বলেন, এ চলমান প্রক্রিয়ার বিষয়ে আমি বিষদ কিছু বলতে গেলে, এই চলমান প্রক্রিয়া ব্যাঘাত প্রাপ্ত হবে। সে জন্য আমি শুধু এ কথা বলবো, এ ব্যাপারে কোনো শিথিলতা নেই এবং তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা যেটা করেছিলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলা শেষ করা এবং পলাতক যারা আছেন তাদের রায় কার্যকর করার ব্যাপারে ফিরিয়ে আনা। তারপর যারা হত্যা করেছিলেন তারা যে শুধু এককভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা নয়, এটার পেছনে একটা ষড়যন্ত্র আছে এবং সেই ষড়যন্ত্রকারী কারা চিহ্নিত করে সারাদেশের মানুষের কাছে তাদের নামটা জানিয়ে দেয়া।তিনি বলেন, এই চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পরে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, এ রকম একটা কমিশন করা। কমিশন করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আপনারা দেখেছেন ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত দেশে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মতো একটা অবস্থা ছিল না। সেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে। সেই করণে আমরা যে রূপরেখা তৈরি করেছি, সেটা জনসম্মুখে… এবং সেটার ব্যাপারে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।আনিসুল হক বলেন, যেই মুহূর্তে করোনাভাইরাস কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে, সেই মুহূর্তেই আমাদের আলোচনায় যেটা আসবে সেটা হচ্ছে- এই কমিশনের রূপরেখাটা কী হবে, এই কমিশনের কার্যাবলিটা কী হবে এবং এই কমিশন কাদের দ্বারা কনস্টিটিউট হবে। এই জিনিজগুলো করোনাভাইরাসের প্রকোপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা দেখতে পারবেন।আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসার পর যে আদলে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যেই ভিত্তি তিনি স্থাপন করে গেছেন, আমরা কিন্তু এখন আইনগুলোতে সেই আদর্শ এবং সেই ভিত্তির ওপর নির্ভর করেই করি।