গ্রাহকদের হয়রানি কমাতে পাসপোর্টের দালালদের বৈধতা দিয়ে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সোমবার (৩০ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইতোমধ্যে দালালদের আইনি বৈধতা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখন এজেন্টদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিধিমালা তৈরির কাজ করছে মন্ত্রণালয় ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।
দালালদের বৈধতা কেন ও কিভাবে?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোকাব্বির হোসেন জানিয়েছেন, একজন সাধারণ নাগরিক যাতে হয়রানি ছাড়া পাসপোর্ট পেতে পারে সেজন্য এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি দালালদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তর।
আরও বলেন, পাসপোর্ট আবেদনকারী অনেকেই নিজের ফর্ম নিজে পূরণ করতে পারেন না, তার সাহায্য লাগে। অনেকে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতেও পারে না। তখন দালালদের প্রয়োজন হয় তাদের। কিন্তু এখনো পর্যন্ত লিগ্যালি কেউ কাজটা করে না। এখন যাতে তারা আইনসিদ্ধভাবে কাজটি করতে পারে সেজন্য বৈধতা দেয়ার এ প্রক্রিয়া নেয়া হয়েছে।
তিনি জমিজমা ও সম্পত্তির দলিল লেখকদের উদাহরণ দিয়ে বলেন, পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও যেহেতু বড় অংশের মানুষের এই সাহায্য প্রয়োজন হচ্ছে, সে কারণে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
বিষয়টির বিস্তারিত, যেমন এজেন্টের যোগ্যতা কী হবে বা কারা এজেন্ট হতে পারবেন সে নিয়ে কাজ চলছে। সেই সঙ্গে পাসপোর্ট এজেন্ট লাইসেন্সিং নামে একটি বিধিমালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
কিভাবে কাজ করবেন এজেন্ট?
নতুন ব্যবস্থা ঠিক কবে চালু হবে তা বলেননি মোকাব্বির হোসেন। তবে নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সরকার নির্ধারিত যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ পেতে পারবেন। একটি নির্ধারিত ফির বিনিময়ে তারা একজন সেবাগ্রহীতাকে পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ, ফর্ম জমা দেয়া এবং ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার মত কাজে সহায়তা করতে পারবেন।
ফলে এজেন্টের মাধ্যমে পাসপোর্টের ফর্ম পূরণ ও আবেদন করতে সরকারি ফির বাইরে একজন গ্রাহককে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হতে পারে।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মোকাব্বির হোসেন জানিয়েছেন, ওই ফি সবার জন্য বাধ্যতামূলক হবে না। কারণ যিনি সাহায্য নেবেন কেবল তিনিই ওই ফি দেবেন।
বাংলাদেশে বহু মানুষ পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ, ফর্ম জমা দিয়ে ছবি তোলা ও বায়োমেট্রিকের জন্য অ্যাপয়েনমেন্ট নেয়া এবং ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার মত সাধারণ এবং অত্যাবশ্যকীয় কাজের জন্য দালালের সহায়তা নেন।
আবার এই পাসপোর্ট করতে গিয়ে তাদের অনেকে ভোগান্তির শিকার হন এমন অভিযোগও শোনা যায়। আর এক্ষেত্রে অভিবাসী শ্রমিকেরাই বেশি ভুক্তভোগী হন।
এ ধরণের ঘটনা আগারগাঁওয়ে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সব জেলাতেই থাকা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যে কারণে পাসপোর্ট অফিসগুলো ঘিরে দালালচক্রের হয়রানি ঠেকাতে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানও চালায়। কিন্তু দালাল নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।