বিদেশি সেনাদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে আফগানিস্তান। দেশের মাটি থেকে বিদায় নিয়েছে বিভিন্ন দেশের সৈন্যরা। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্র তাদের তল্পিতল্পা গুটিয়ে কাবুল ছেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ফ্লাইট কাবুল ছাড়ার পর আফগানিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাজধানী কাবুলে অবস্থিত হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন তালেবান যোদ্ধারা। পরই জয় উদযাপন করতে দেখা গেছে তাদের। আকাশে গুলি ছুড়ে আফগান সদস্যরা আনন্দ প্রকাশ করেছেন। এর আগে তালেবান দেশের নিয়ন্ত্রণ নিলেও যুক্তরাষ্ট্র কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু অবশেষে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণও এখন তালেবানের হাতে।
মঙ্গলবার কাবুল বিমানবন্দর থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আমাদের এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান এখন স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পরাজিত হয়েছে এবং আমাদের দেশের পক্ষ থেকে আমরা বিশ্বের বাকি দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই। আমরা আফগান নাগরিকদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমরা আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তি এবং ইসলামিক মূল্যবোধ রক্ষা করব।
এদিকে, আফগানিস্তান ছাড়ার আগে নিজেদের সামরিক প্লেন, সাঁজোয়া যানবাহনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট করে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সোমবার রাতে কাবুল বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ফ্লাইট ছাড়ার আগে সবকিছু নিস্ক্রিয় করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈন্যরা।
মার্কিন মিশনের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি জানিয়েছেন, ৭৩টি সামরিক বিমান, ৭০টি সাঁজোয়া যান এবং আরও ২৭টি সামরিক সরঞ্জাম নষ্ট করে ফেলা হয়েছে যেন পরবর্তী সময় এগুলো তালেবানরা ব্যবহার করতে না পারে।
তিনি বলেন, এ সামরিক বিমানগুলো আর কখনওই আকাশে উড়বে না। এগুলো আর কেউ চালাতে পারবে না। লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তালেবান সদস্যরা বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করে মার্কিন সামরিক বিমান এবং অন্যান্য জিনিসপত্র দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র তাদের উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন রকেট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও নিস্ক্রিয় করে গেছে এবং এর কিছুই তারা সাথে করে নিয়ে যায়নি।