চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে পন্যবাহী রেলগাড়ি চলাচল করলেও ৮ মাস ধরে পাইলক্যাপের উপর ৯২টি পিলারের রড নিয়ে থমকে আছে চিলাহাটি রেল স্টেশনের কাজ। স্টেশনের মূল দ্বিতল আধুনিক ভবন নির্মাণের জন্য ১৭৫টি পাইলিং কাজের পর থেকে রেলস্টেশনের সমস্ত কাজ বন্ধ রয়েছে।
দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় মূল ভবনের পিলারের রডগুলোতে মরিচা ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের সিংহভাগ শ্রমিক অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেনি। প্রকল্পটি ৮০ কোটি থেকে বৃদ্ধি করে প্রায় ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দর পর অনুমোদন না হওয়ায় কাজ বন্ধ রেখেছে। ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানিকৃত পাথরের ওয়াগানগুলি ১৪ দিন ধরে হলদিবাড়ি রেল স্টেশনে পড়ে আছে। লুপ লাইন স্থাপন না হওয়ায় জায়গার অভাবে হলদিবাড়ি থেকে পন্যবাহী ওয়াগানগুলি চিলাহাটি স্টেশনে আসতে পারছেনা। চিলাহাটি রেল স্টেশনের কাজগুলো শেষ হলেই এই রেলপথ দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কাজ শেষ না হওয়ায় দুই দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রেলওয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ব্যবসা বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশের মংলা পোর্ট হয়ে ভারতের উত্তরপূর্ব অংশ নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো মনোন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সুবিধা জোরদারের লক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জুন চিলাহাটি রেলওয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগের পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পন্যবাহী ও ২০২১ সালের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী রেলগাড়ী চলাচলের উদ্বোধন করেন দুই দেশের সরকার প্রধান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাসট্রাকচারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রোকনুজ্জামান সিয়াব বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় ২০ কোটি টাকার অতিরিক্ত কাজ করা হয়েছে। বাড়তি প্রকল্পর কাজগুলো ডিপিপি থেকে আরডিপি না হওয়ায় নতুন করে অর্থ সংস্থান হচ্ছে না তাই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় জমির মালিকদের বাধার মুখে দাঁড়িয়ে আছে লুপ লাইন বসানোর কাজ।
জমির মালিক রুমান মালেক বসুনীয়া বাংলানিউজকে বলেন, শুরু থেকে রেলওয়ের কাজের জন্য আমরা জমি দিতে প্রস্তুত আছি। ইতোমধ্যে মালিকানা পুকুরগুলো ভরাট করাও হয়েছে। জমির উপর থেকে অনেক স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কোন নোটিশ পাইনি। এখন ক্ষতিপূরণ পেলেই আমাদের আর কোনো বাধা থাকবে না।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী ডিবিশনের প্রকৌশলী-২ প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহীম বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকটি কাজ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন বাকি আছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।