শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতটা ছিল আর্থার অ্যাশে নক্ষত্রপতন ও টিনএজ সেনসেশনদের ইতিহাস রচনার রাত। এই রাতে পুরুষদের তিন নম্বর বাছাই স্টেফানোস সিসিপাসকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন স্প্যানিশ টিনএজার কার্লোস অ্যালকারাজ গারফিয়া। আর চার বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন বিশ্বের তিন নম্বর বাছাই নারী টেনিস তারকা নাওমি ওসাকাকে হারিয়ে টেনিসবিশ্বকে বিস্মিত করলেন আরেক টিনএজার লেইলাও।
মানসিক অবসাদে ভোগায় ফরাসি ওপেন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ইউএস ওপেনে ফিরেছিলেন নাওমি ওসাকা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের থেকে প্রত্যাশাও ছিল অনেক বেশি। তবে ১৮ বছরের কানাডিয়ান সুন্দরী লেইলা অ্যানি ফার্নান্ডেজের কাছে তো ম্যাচ হারলেনই, উপরন্তু কোর্টে বারংবার মেজাজ হারিয়ে বিতর্কের মুখে জাপানের টেনিস তারকা। এর আগে কোনদিনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের চতুর্থ রাউন্ডে পৌঁছাননি বিশ্বের ৭৩ নম্বর বাছাই লেইলা অ্যানি।
প্রথম সেটে হারলেও ১৮ বছরের লেইলা পরে ৫-৭, ৭-৬(২), ৬-৪ ব্যবধানে ওসাকাকে পরাস্ত করেন। ম্যাচে একাধিকবার মেজাজ হারান ওসাকা। মানসিক অবসাদে ভোগা ওসাকা ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে নিজের একাগ্রতা হারিয়ে ফেলেন। একাধিকবার কোর্টে নিজের ব়্যাকেট তো ছুঁড়ে ফেলেনই, এমনকী ইচ্ছাকৃতভাবে দেরীতে সার্ভ করায় শুনতে হয় কোর্টে উপস্থিত দর্শকের কটাক্ষও।
এদিকে রাফায়েল নাদালের রাজত্বের পর তাকেই স্প্য়ানিশ টেনিস জগতের পরবর্তী তারকা হিসেবে মনে করছেন অনেকেই। সেই কার্লোস অ্যালকারাজই এদিন তার যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রমাণ দিলেন ইউএস ওপেনে। পাঁচ সেটের নাটকীয় লড়াইয়ে বিশ্বের তিন নম্বর টেনিস তারকা স্টেফানোস সিসিপাসকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়লেন ১৮ বছর বয়সী তারকা।
১৯৭৩ সালে এটিপি ব়্যাঙ্কিং চালু হওয়ার পর থেকে কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসাবে প্রথম তিনে থাকা টেনিস তারকাকে পরাস্ত করেন অ্যালকারাজ। ম্যাচের প্রথম সেটেই ৬-৩ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেও ৪-৬ ব্যবধানে দ্বিতীয় সেট হারেন অ্যালকারাজ। এরপরই শুরু হয় চূড়ান্ত নাটক। তৃতীয় সেটে টাইব্রেকারে স্প্যানিয়ার্ড ৭-৬ (২) জিতলেও, চতুর্থ সেটে তাঁকে ০-৬ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে কড়া বার্তা দেন সিসিপাস।
তবে তাতে দমে যাননি টিনএজ সেনসেশন। পঞ্চম সেটে দুই তরুণের লড়াইয়ে মুগ্ধ হয়ে থাকল যুক্তরাষ্ট্রের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম। চার ঘণ্টারও অধিক সময়ের এক ঐতিহাসিক লড়াইয়ের পর পঞ্চম সেটও ট্রাইব্রেকারে পৌঁছায় এবং সিসিপাসকে ৭-৬ (৫) ব্যবধানে হারিয়ে সেট ও ম্যাচ নিজের নামে করে নেন অ্যালকারাজ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে পিট সাম্প্রাস ও মাইকেল চ্যাঙের পর কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসাবে ইউএস ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে নিজের জায়গা পাকা করলেন অ্যালকারাজ।
অন্যদিকে, ম্যাচে সামান্য হলেও ক্লান্ত দেখিয়েছে সিসিপাসকে। সেটের মাঝে দীর্ঘ সময় ব্রেক ও খেলার ধরন দেখেই তা বোঝা গিয়েছিল।