1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন

কোভিড লাল-তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ইউরোপে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের ওপর বিদ্যমান লাল-তালিকাভুক্ত ভ্রমণ বিধিনিষেধ পর্যালোচনা করার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশের জোরদার টিকাদান কার্যক্রম এবং কোভিড সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে ৯.৮২ শতাংশে হ্রাস এবং বর্তমানে বাংলাদেশে আটকা পড়া ৭ হাজারেরও বেশি ব্রিটিশ-বাংলাদেশীর দুর্ভোগের বিষয়গুলোর প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের উচিৎ বাংলাদেশকে কোভিড লাল-তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা।

উত্তরে রাব আশ্বাস দেন যে, যুক্তরাজ্য বিষয়টি পর্যালোচনা করবে এবং তার সরকার বাংলাদেশে কোভিড সংক্রমণ হ্রাসের বিষয়ে ভালোভাবে অবগত। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি আশ্বস্ত করতে চাই আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাংলাদেশের ঘন ঘন জিনোমিক সিকোয়েন্সিং ডেটা আপলোডের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সরকার লাল-তালিকায় বাংলাদেশের বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। তবে তিনি বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত পর্যালোচনা করেন।

প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান ঐতিহাসিক ও মূল্যবান সম্পর্কের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় এবং ব্র্রেক্সিট পরবর্তী কৌশলগত অংশীদারিত্ব ভিত্তিক উচ্চাকাক্সক্ষী ও সম্প্রসারণশীল বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি তারা যৌথভাবে উদযাপন করতে একমত হন।

নিরাপদ ও টেকসই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান রোহিঙ্গা সংকট ও অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা করে ড. মোমেন মিয়ানমার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বেও সংঘটিত সামরিক দমন অভিযানের উল্লেখ করেন।

তিনি বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগের জন্য ব্রিটিশ মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে রাব রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, আসিয়ান এবং জি-৭-ভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে একযোগে যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াবে। উভয় মন্ত্রী বর্তমান আফগান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে সম্মত হন।

ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিদ্ধ এবং আফগানিস্তানের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। এছাড়া, আফগানিস্তানের টেকসই ভবিষ্যতের জন্য তাদের নাগরিকদের কথা শোনা উচিত।

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে মোমেন বিশেষ করে মহামারী পরবর্তী অর্ডার বাতিল এবং যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতাদের অর্থ পরিশোধ না করার কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ক্ষতির ফলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের শূন্য শুল্কের জিএসপি সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান করেন।

সৌদি আরব, জাপান, ভারত, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বাংলাদেশে ইতোমধ্যে নিবেদিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সুবিধা গ্রহণকারী দেশগুলোর উল্লেখ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব দেন।

তিনি তথ্যপ্রযুক্তি এবং পরিবেশ বান্ধব তৈরি পোশাক এবং পোশাক শিল্পের পাশাপাশি অফশোর সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক গণপরিবহন ও রেল খাতে নতুন বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।

জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ড. মোমেন কোপ-২৬ সভাপতি অলোক শর্মার সঙ্গে তার সাম্প্রতিক বৈঠকের কথা স্মরণ করেন এবং গ্লাসগোতে কোপ২৬ লিডারস সামিটের সময় সিভিএফ-কোপ২৬ লিডারস সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অংশগ্রহণের জন্য সিভিএফ সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের অনুরোধের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি কোপ২৬-এ বাংলাদেশ এবং সিভিএফের অগ্রাধিকার এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে রাবকে অবহিত করেন এবং গ্লাসগোতে লোকসান ও ক্ষতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি যথাযথভাবে সমাধানের জন্য যুক্তরাজ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশকে জলবায়ু নেতৃত্বের দেশ এবং এর সক্রিয় সিভিএফ সভাপতির ভূমিকার প্রশংসা করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে ২০৫০ সালের মধ্যে নেট জিরো অবস্থা এবং দূষণমুক্ত জ্বালানি উৎপাদনে উত্তরণের ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানান।

ড. মোমেন ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের নিম্ন কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য উন্নত দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে উপযুক্ত প্রযুক্তি, বৃহৎ বিনিয়োগ ও অর্থায়ন অবিলম্বে হস্তান্তরের আহ্বান জানান। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বৈঠকে যোগ দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি