আজ শনিবার তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও ‘মিত্র দেশগুলোর চাপে’ ওই শপথ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তালেবানের নতুন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, ইরান, চীন, কাতার ও পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে। তবে রুশ বার্তা সংস্থা তাসের শুক্রবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী মিত্র দেশগুলোর পক্ষ থেকে চাপ আসায় শনিবারের শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তালেবানের সরকারের অভিষেক অনুষ্ঠানে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে কেউ থাকবে না। এর আগে অবশ্য মস্কো জানিয়েছিল, আফগানিস্তানের নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাশিয়ার পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
তাসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ন্যাটো মিত্ররা ৯/১১ হামলার বিশ বছর পূর্তির দিনে তালেবানের নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে কাতার সরকারকে তা বাতিল করতে তালেবানকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এরপর শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত আসলো।
যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ন্যাটো মিত্ররা এ নিয়ে আরও বলে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার বিশ বছর পূর্তির দিনে তালেবানের নতুন সরকারের শপথগ্রহণ তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলবে। এছাড়া এমন দিনে তাদের শপথগ্রহণ বিশ্বব্যাপী জিহাদিদের জন্য হবে অনুপ্রেরণাদায়ক।
তালেবান সরকারের সাংস্কৃতির কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি অবশ্য টুইটে লিখেছেন, ‘কয়েকদিন আগেই নতুন আফগান সরকারের অভিষেক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। সরকার মানুষকে আর বিভ্রান্ত করতে চায় না। ইতোমধ্যে ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানে মন্ত্রিসভা ঘোষণা হয়েছে। সবাই কাজও শুরু করেছেন।’
উল্লেখ্য, ৯/১১ হামলার এক মাসের মাথায় আল-কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। অভিযানের এক মাস পর আফগানিস্তানের তৎকালীন তালেবান সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। গত ৩০ আগস্ট মার্কিন সেই অভিযানের সমাপ্তিতে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে তালেবান।
গত ১৫ আগস্ট কাবুলে ঢোকার মধ্য দিয়ে গোটা আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান। গত মঙ্গলবার তালেবান অন্তবর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা দিয়েছে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের প্রতিশ্রুতি দিলেও পুরুষ-সর্বস্ব সরকার গঠন করে পূর্বের ন্যায় শরিয়াহ আইনে দেশ শাসনের ঘোষণা দিয়েছে এই গোষ্ঠী।