জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর প্রভাবে আগামী তিন দশকের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২১ কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ঘরছাড়া হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে চার কোটির বেশি মানুষ। গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের হালনাগাদ গ্রাউন্ডসওয়েল প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ছয়টি অঞ্চলের ২১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। ২০৩০ সালের দিকেই অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের হটস্পটগুলো সামনে আসা শুরু হয়ে যেতে পারে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে তা তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন কমানো এবং সবুজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিস্থাপক উন্নয়নে অবিলম্বে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জলবায়ু পরির্বতনজনিত অভিবাসনের হার ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের একটি শক্তিশালী কারণ। মানুষের জীবিকা ও উন্মুক্ত স্থানে বসবাসের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এজাতীয় কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকায় ৮ কোটি ৬০ লাখ মানুষ, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় ৪ কোটি ৯০ লাখ, দক্ষিণ এশিয়ায় চার কোটি, উত্তর আফ্রিকায় ১ কোটি ৯০ লাখ, লাতিন আমেরিকায় ১ কোটি ৭০ লাখ এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলে ৫০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জুয়ের্গেন ভয়েগেল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের, বিশেষ করে এতে সবচেয়ে কম অবদান রাখা দরিদ্রদের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা স্মরণ করিয়ে দেয় গ্রাউন্ডসওয়েল প্রতিবেদন। এটি জলবায়ু সংশ্লিষ্ট অভিবাসনের জন্য দায়ী বিষয়গুলো সমাধানে দেশগুলোর সামনে একটি পথও স্পষ্ট করে দেয়। এসব বিষয় মৌলিকভাবে সংযুক্ত। এ কারণে আরও টেকসই, নিরাপদ ও স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যৎ তৈরিতে জলবায়ু ও উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশগুলোকে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।