যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসার ধরন যেমন বদলাচ্ছে, তেমনি গতি পাচ্ছে আর্থিক লেনদেনেও। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা কেনাবেচার অন্যতম মাধ্যম হলো ই-কমার্স। দিনদিন এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জনপ্রিয়তার আড়ালে একশ্রেণির অসাধু চক্র এর অপব্যবহারেরও সুযোগ নিচ্ছে। নানা অফার দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এমনই একটি মাধ্যম হলো ‘রিং আইডি’। সামাজিক যোগাযোগের এ মাধ্যমে বিনিয়োগ করে অনেক গ্রাহক এখন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ভোগান্তির শিকার এমন এক গ্রাহক মো. রাব্বি হোসেন। তার দাবি, এক মাস আগে ‘গোল্ড মেম্বারশিপ’ কেনার জন্য ২২ হাজার টাকা পেমেন্ট করেন। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকাও কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু এখনও অ্যাকটিভ হয়নি আইডি। গ্রাহকের কাছ থেকে আইডি খোলা এবং আয়ের নানা প্রলোভন দেখিয়ে রিং আইডি হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। কম সময়ে এবং সহজে মুনাফার আশায় এখানে বিনিয়োগ করছেন অনেক গ্রাহক। চোখে-মুখে স্বপ্নের জাল বুনলেও শেষে অন্ধকার দেখছেন তারা।
তিনি বলেন, রিং আইডি কমিউনিটি জবস মেম্বারশিপ’ নেয়ার জন্য গত ১২ আগস্ট বিকাশের মাধ্যমে ২২ হাজার টাকা পেমেন্ট করি। এখন পর্যন্ত আমার আইডি অ্যাকটিভ হয়নি। অনেক জায়গায় যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি। এখন কী করব বুঝতেছি না। এভাবে মেম্বারশিপের নামে শত শত গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। শুধু জবস মেম্বারশিপ দেয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। মেম্বারশিপ দিয়েও নানা ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে। এমন একটি সিস্টেম হলো ‘ক্যাশ আউট’। নিজের জমানো টাকা উঠাতে পারছেন না গ্রাহকরা। বিভিন্নভাবে এজেন্টের কাছে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে রিং আইডি ‘কমিউনিটি জবস মেম্বারশিপ’ চালু করে। মেম্বারশিপের মাধ্যমে এখানে বিনিয়োগ করে টাকা আয়ের সুযোগ দেয়া হয়। এজন্য বর্তমানে দুটি প্যাকেজ অফার রয়েছে। সিলভার মেম্বারশিপ ও গোল্ড মেম্বারশিপ। সিলভার মেম্বারশিপের মূল্য ১২ হাজার টাকা এবং গোল্ড মেম্বারশিপের মূল্য ২২ হাজার টাকা। পাশাপাশি এখানে আরও দুটি প্রবাসী প্যাকেজ রয়েছে। ‘প্রবাসী গোল্ড’ ২৫ হাজার টাকা এবং ‘প্রবাসী প্লাটিনাম’ ৫০ হাজার টাকা। মেম্বারশিপ পাওয়ার পর বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ওই বিজ্ঞাপন যত গ্রাহক দেখেন তত টাকা ইনকাম হয়।
এভাবে রিং আইডি কমিউনিটি জবস মেম্বারশিপের সিলভার প্যাকেজ থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা এবং প্রতি মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা, গোল্ড মেম্বারশিপ থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়। এছাড়া প্রবাসী গোল্ড মেম্বারশিপ থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা, প্রবাসী প্লাটিনাম প্যাকেজ থেকে প্রতিদিন এক হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয়ের সুযোগ আছে বলে অফার দেয় রিং আইডি।
রিং আইডি কমিউনিটি জবস মেম্বারশিপ’ নেয়ার জন্য গত ১২ আগস্ট বিকাশের মাধ্যমে ২২ হাজার টাকা পেমেন্ট করি। এখন পর্যন্ত আমার আইডি অ্যাকটিভ হয়নি। অনেক জায়গায় যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি। এখন কী করব বুঝতেছি না। এভাবে মেম্বারশিপের নামে শত শত গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতারণা ও গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। নিয়োগ দিতে হবে রেগুলেটরি বা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান। তা হলেই ই-কমার্সে ফিরবে শৃঙ্খলা।