দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে চেন্নাই। অথচ প্রথম পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। সেখান থেকে ১৫৬ পর্যন্ত যাওয়ার মূল কারিগর ডানহাতি ওপেনার রুতুরাজ গাইকদ।
ট্রেন্ট বোল্ট ও অ্যাডাম মিলনের তোপে মাত্র ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও দমে যাননি রুতুরাজ। রবীন্দ্র জাদেজাকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে গড়েছেন ইনিংস। আর শেষদিকে ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে মিলে তুলেছেন ঝড়। শুরু থেকে শেষপর্যন্ত খেলে রুতুরাজ করেছেন ৫৭ বলে ৮৮ রান।
বোল্টের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে লেগ বাই থেকে মাত্র একটি রান করতে পারে চেন্নাই, ওভারের পঞ্চম বলে হারায় ফাফ ডু প্লেসির উইকেট। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ডু প্লেসির মতোই রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফেরেন মঈন আলি। একই ওভারের শেষ বলে কনুইয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান আম্বাতি রাইডু।
চেন্নাইয়ের বিপদ আরও বাড়ে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সুরেশ রায়নাও আউট হয়ে গেলে। ট্রেন্ট বোল্টের বলে এলোপাথাড়ি ব্যাট চালাতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন রায়না। নিজের ব্যাটের নিচের অংশ ভাঙার পাশাপাশি উইকেটটিও খোয়ান আইপিএলের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান রায়না।
তখন দলের সংগ্রহ ৭ রানে ৩ উইকেট। তরুণ রুতুরাজকে নিয়ে চাপ সামাল দেয়ার মিশনে নামেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিন্তু পারেননি বেশি দূর যেতে। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে তাকে সাজঘরে পাঠান মিলনে। বড় শট খেলার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন ২ রান করা ধোনি।
পাওয়ার প্লে শেষে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ ছিলো ৪ উইকেটে ২৪ রান। সেখান থেকে কোনোমতে সম্মানজনক স্কোরের আশায়ই হয়তো ছিলো চেন্নাইয়ের ভক্ত-সমর্থকরা। কিন্তু ভিন্ন চিন্তাই ছিলো রুতুরাজের। তবে শুরুতেই হাত খুলে খেলতে পারেননি তিনি। ফলে ইনিংসের ১০ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় মাত্র ৪৪ রান।
রুতুরাজ প্রথমবারের মতো হাত খোলেন ইনিংসের ১২তম ওভারে গিয়ে। ক্রুনাল পান্ডিয়ার করা সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে হাঁকান ছক্কা। সঙ্গে জাদেজার হাঁকানোর দুই চারের মারে সেই ওভার থেকে আসে ১৮ রান। তবু সে অর্থে বাড়ছিল না দলীয় সংগ্রহ। ইনিংসের ১৫ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ হয় ৪ উইকেটে ৮৭ রান।
শেষ ৫ ওভারে মুম্বাইয়ের বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন রুতুরাজ। ষোলোতম ওভারের শুরুতে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৯ বলে ৪৬ রান করে। শেষের ৫ ওভারে আরও ১৮ বল খেলে যোগ করেন ৪২ রান। ষোলোতম ওভারে ১১ রান নেয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চেন্নাইয়ে রানরেট ছয়ের বেশি হয়।
ইনিংসের ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা হজম করলেও চতুর্থ বলে জাদেজাকে ফিরিয়ে ৮১ রানের জুটি ভাঙেন বুমরাহ। আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে ২৬ রান করেন জাদেজা। এরপর শুরু হয় রুতুরাজ ও ব্রাভোর তাণ্ডব। তবে ১৮তম ওভারে ১০ রানের বেশি নিতে পারেননি দুজন।
রুতুরাজ-ব্রাভোর আসল তোপের মুখে পড়েন বোল্ট। ইনিংসের ১৯তম ওভারটি করতে এসে তিন ছয় ও এক চারের মারে ২৪ রান খরচ করে বসেন বোল্ট। যেখানে ছক্কা তিনটিই হাঁকান ব্রাভো। বুমরাহর বলে শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৮ বলে ২৩ রান করেন ব্রাভো। আর ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৮৮ রানে অপরাজিত থাকেন রুতুরাজ।