আগামী মাস থেকেই ফের ভ্যাকসিন রপ্তানি এবং বিভিন্ন দেশকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে ভারত।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মানদাভিয়া সোমবার এই ঘোষণা দিয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী দেশ ভারত গত এপ্রিলে ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। সে সময় দেশটিতে হঠাৎ করেই করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নিজের দেশের জনগণকে আগে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে অন্য দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহ বা বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান বন্ধ রাখা হয়।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী মাস থেকে উদ্বৃত্ত টিকার রফতানি এবং উপহার পাঠানো পুনরায় শুরু করবে ভারত। গত মার্চের শুরুর দিকে ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়; সেই সময় দৈনিক গড়ে ৪ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন এবং প্রতিদিন ৪ হাজারেরও বেশি মৃত্যু দেখে দেশটি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে এপ্রিলের মাঝামাঝি বিদেশে টিকা রফতানিতে স্থগিতাদেশ দেয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকার উৎপাদনকারী ভারত। বর্তমানে সেই বিপর্যয় অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বেড়েছে টিকাদানের গতিও।
ভারতের প্রাপ্ত বয়স্ক ৯৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে টিকার পূর্ণ ডোজ দিতে চায় দেশটির সরকার। এখন পর্যন্ত এই জনগোষ্ঠীর ৬১ শতাংশকে মাত্র এক ডোজ করে টিকা দেওয়া হয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগের দিন সোমবার টিকার রফতানি পুনরায় শুরুর এই ঘোষণা এল। ওয়াশিংটনে কোয়াডভূক্ত চার দেশ— যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার নেতাদের সম্মেলনে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
পুনরায় শুরু হতে যাওয়া টিকার রফতানি, যা ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’ নামে পরিচিত— তাতে প্রতিবেশী প্রথম নীতি অগ্রাধিকার পাবে জানিয়ে মান্দাভিয়া বলেন, গত এপ্রিল থেকে দেশে ভ্যাকসিনের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে এবং আগামী মাস থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডোজের চারগুণ বেশি হতে চলেছে। দেশে টিকাদানের পর শুধুমাত্র উদ্বৃত্ত টিকাই রফতানি করা হবে জানিয়ে ভারতের এই মন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশিরাই প্রথম।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে প্রায় ৬৭ কোটি ডোজ টিকা উপহার ও রফতানি হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত।
উপহার ও রফতানি হিসেবে ভারত পাঠিয়েছিল করোনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ড, যেটি প্রস্তুত করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষকে কমপক্ষে ভ্যাকসিনের আওতায় পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
এরইমধ্যে ৬১ শতাংশ মানুষকে কমপক্ষে ভ্যাকসিনেরর একটি ডোজ দেওয়া হয়েছে।