1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২১ অপরাহ্ন

চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশিদের, কলকাতার অভিনেত্রীদের বাড়ছে ক্ষোভ

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কলকাতার গুণী পরিচালক ও অভিনেতা অরিন্দম শীলের হাত ধরে ২০১৩ সালে কলকাতার সিনেমায় অভিষিক্ত হন  বাংলাদেশের জয়া আহসান। ছবির নাম ‘আবর্ত’। প্রথম ছবি দিয়েই বাজিমাত করেন। এরপর একে একে জয়া ওপার বাংলার দর্শক মুগ্ধ করেছেন ‘বিজয়া’, ‘বিসর্জন’, ‘একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো’, ‘রাজকাহিনি’, ‘ভালোবাসার শহর’, ‘ঈগলের চোখ’, ‘কণ্ঠ’, ‘‘বিনিসুতোয়’ ইত্যাদি সিনেমা দিয়ে।

এখনো তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন টালিগঞ্জে। তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা সেখানে আকাশ ছোঁয়া।
বলা চলে কলকাতার উল্লেখযোগ্য প্রায় সব পরিচালক ও প্রযোজকদের প্রথম পছন্দ জয়া। তার চাহিদার প্রভাবে ম্লান খোদ কলকাতারই অনেক অভিনেত্রী। যে তালিকায় আছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, স্বস্তিকা মুখার্জি, পাওলি দাম, রাইমা সেনের মতো গুণী অভিনেত্রীরা।

দীর্ঘদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অবশেষে এ নিয়ে বিশেষ লেখাও প্রকাশ করলো কলকাতার জনপ্রিয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।

পত্রিকাটির দাবি, জয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের মিথিলা ও বাঁধনেরও চাহিদা বেড়েছে ওপার বাংলার সিনেমা-সিরিজে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে না বললেও টলিউডের অনেক অভিনেত্রীর চাপা ক্ষোভ রয়েছে।

জয়া আহসান প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী যিনি টলিউডে পরপর কাজ করছেন অনেক বছর ধরেই। তারপর রাজকীয় একটা অভিষেক পান সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ওয়েব সিরিজ় ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’তে আজমেরী হক বাঁধন। তার কাজও প্রশংসিত হয়েছে। তাকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন কলকাতার অনেক পরিচালকই।

এদিকে রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘মায়া’, রিঙ্গোর ছবি ‘আ রিভার ইন হেভন’এ রয়েছেন এপার বাংলার আরেক অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। সৃজিত মুখার্জির স্ত্রী হিসেবে তো একটা প্রভাব রয়েছেই, বাংলাদেশের একজন চাহিদাসম্পন্ন অভিনেত্রী হিসেবেও মিথিলার গুরুত্ব বাড়ছে ওপারে।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের প্রতি কলকাতার এই আগ্রহের মূলে কিন্তু দর্শক। মূলত কলকাতার পরিচালকদের কাজগুলোর প্রতি খুবই আগ্রহী ঢাকার দর্শকেরা। তা সে সিনেমা হলের জন্যই হোক বা হইচই, জি ফাইভ হোক। এসব দর্শক ধরতেই সেখানকার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও নির্মাতারা বাংলাদেশের অভিনেত্রীদের প্রাধান্য দিচ্ছেন।

জয়া, মিথিলারা যে ঘরানার ছবিতে কাজ করেন, তাতে এর আগে সাধারণত পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, রাইমা সেনদের দেখা যেত। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির চাহিদা কমে যাওয়ায় শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহানেরাও অন্য ধারার ছবির দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে অল্প পরিসরে প্রতিযোগিতা বেশি চলছে কলকাতায়। সেখানে পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থাকছেন বাঁধনেরা।

আনন্দবাজার বলছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নায়িকা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ‘এমন অনেক চরিত্রই বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়, যেটা এখানকার যে কেউ করতে পারত’।

জয়া অবশ্য এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। আনন্দবাজারে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘কাজের সুযোগ সকলেরই আছে। সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা তো ভালই। আমার মতে শিল্পের কোনো সীমারেখা থাকা উচিত নয়’।

শিল্পের আদানপ্রদানের উপরে জোর দিলেন মিথিলাও। ‘কেউ কারও কাজ, জায়গা কেড়ে নিতে পারে বলে মনে হয় না। সকলেই নিজের যোগ্যতা দিয়ে কাজ পাচ্ছেন। আমি বৈবাহিক সূত্রে কলকাতায় থাকছি, তাই এখানেই কাজ করছি এখন। তবে আমি এখানে সদ্য কাজ শুরু করেছি। আমাকে বোধহয় কারও প্রতিযোগী হিসেবে দেখাটা ঠিক হবে না,’- দাবি মিথিলার।

অভিনেত্রী এটাও মনে করিয়ে দিলেন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন। নব্বই দশকে কলকাতার শতাব্দী রায়, বলিউডের চাঙ্কি পান্ডেরাও বাংলাদেশি সিনেমায় কাজ করেছেন। এটা দুই দেশের শিল্প আদান প্রদানের একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত। এখানে মন্দভাবে প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবার কিছু নেই।

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার মন্তব্যে বলেন, ‘অনেকে বলছেন, বাংলাদেশ থেকে অভিনেত্রীরা এসে কাজ করায় টলিউডের কিছু অভিনেত্রীর মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আসলে আমাদের সমাজ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে দেয়। বিশেষ করে মহিলাদের উপরেই বেশি চাপ তৈরি করা হয়। কেন এই চাপগুলো আমাদের নিতে হবে? এগুলো এড়িয়ে সদর্থক দিকগুলো ভাবলে, সকলেরই ভাল হবে। সকলে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবেন। কথাটা কলকাতা-বাংলাদেশ সব ইন্ডাস্ট্রির নিরিখেই বলছি।’

অভিনেত্রীরা দাবি করছেন, প্রতিযোগিতা ছিল, থাকবেও। তবে প্রতিভাই যে শেষ কথা বলবে, দ্বিমত নেই তা নিয়েও।

যেমন প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে কলকাতায় পা রেখেছিলেন নুসরাত ফারিয়া, মাহিয়া মাহি, শাকিব খান, আরিফিন শুভসহ আরও অনেকেই। কিছু উল্লেখ করার মতো সাফল্যও রয়েছে তাদের সেখানে। কিন্তু দিনশেষে জয়া আহসানের মতো কেউই ওপার বাংলার ইন্ডাস্ট্রিতে শক্ত অবস্থান করে নিতে পারেননি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি