চীনবিরোধী ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা জোট অকাস গঠনের পর সৃষ্ট মনোমালিন্য দূর করতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। বুধবার দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনালাপের পর ফ্রান্স তাদের রাষ্ট্রদূতকে ওয়াশিংটনে ফেরত পাঠাতে রাজি হয়েছে।
ফ্রান্সের কাছ থেকে সাবমেরিন কেনার বদলে অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রযুক্তি নিতে যে চুক্তি করেছে সে বিষয়ে প্যারিসের সঙ্গে আলোচনা না করা ওয়াশিংটনের ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে হোয়াইট হাউসও।
ফোনালাপে দুই প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে আস্থা ফেরাতে বিশদ আলোচনা শুরু এবং অক্টোবরের শেষদিকে ইউরোপে মুখোমুখি বৈঠক করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
সাহেল অঞ্চলে ইউরোপের দেশগুলো সন্ত্রাসবাদবিরোধী যেসব অভিযান চালাচ্ছে সেখানে সহায়তা বাড়াতে ওয়াশিংটন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে মূলত সাহেলে লড়াইয়ে মিত্রদের লজিস্টিক সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের কথা বলা হয়নি, বলছেন জো বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সপ্তাহখানেক আগে অকাস গঠনের ঘোষণা দেয়।
অকাসের আওতায় প্রথমবারের মতো পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরিতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রযুক্তি সরবরাহ করার কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের।
এ কারণে অস্ট্রেলিয়া ৫ বছর আগে ফ্রান্সের কাছ থেকে ১২টি সাবমেরিন নিতে ৪ হাজার কোটি ডলারের যে চুক্তি করেছিল, তা বাতিল করে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফ্রান্স; যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তাদের ‘পিঠে ছুরি মেরেছে’ বলে মন্তব্য করেন ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-যুব লে দ্রিয়ান।
প্যারিস পরে ওয়াশিংটন ও ক্যানবেরা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদেরও ডেকে পাঠায় এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা বৈঠকও বাতিল করে দেয়।
ফ্রান্সের ক্ষোভ প্রশমনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে বাইডেনের ফোনের পর ফ্রান্স যুক্তরাষ্ট্রে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠাতে রাজি হলেও অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রদূত ফেরত পাঠানো নিয়ে কিছু বলেনি।
বুধবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি দ্ইু প্রেসিডেন্টের ফোনালাপকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ অভিহিত করে ফ্রান্সের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের (বাইডেন) সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বন্ধুত্বপূর্ণ ফোনালাপ হয়েছে। তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়া, অনেক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করা ও অক্টোবরে মুখোমুখি বসার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।’
খবর রয়টার্স।