ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সিলেট জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তুষার কান্তি সাহার বিরুদ্ধে। গতকাল রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব কিংবা অতিরিক্ত সচিবের মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করে কমিটির আগামী বৈঠকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
গতকালের বৈঠক শেষে তুষার কান্তি সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উনি বিভাগের সঙ্গে নিয়মমাফিক চলেন না। শুনেছি উনি ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। অভিযোগের সত্যতা জানতে আমরা তাকে তলবও করেছি।’ সংসদীয় কমিটির কাছে দাখিলকৃত অভিযোগে বলা হয়েছে, ভারতের কলকাতায় তুষার কান্তি সাহার বাড়ি রয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা সেখানেই থাকেন। তিনি সরকারি কাজের অবহেলা করে প্রায়ই ভারতে চলে যান।
এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক গতকাল রাতে বলেন, ‘তুষার কান্তি সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে। কিন্তু রিপোর্টটি কমিটির কাছে সন্তোষজনক হয়নি। তাই সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব কিংবা অতিরিক্ত সচিবের মাধ্যমে পুনরায় তদন্ত করিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছে কমিটি।’
এদিকে, পুলিশের পরিবর্তে নিজস্ব জনবল দিয়ে সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি সব সেতুর টোল আদায়ে একটি কমন সফটওয়্যার ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় সাব-কমিটির পক্ষ থেকে এ সুপারিশ করা হয়। গতকাল মূল কমিটির বৈঠকে সাব-কমিটির উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির আগের বৈঠকে ধলেশ্বরী সেতু, বঙ্গবন্ধু সেতুসহ অন্যান্য সেতুর টোল আদায় পদ্ধতি এবং দরপত্র ছাড়ার সময় বৃদ্ধিসহ যাবতীয় কার্যক্রম তদন্তে একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
সাব-কমিটির প্রধান ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জানান, ধলেশ্বরী সেতুর টোল আদায়ের ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন করে দরপত্র না হওয়া পর্যন্ত সওজের প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে একটি টিমের মাধ্যমে টোল আদায় প্রক্রিয়া সম্পন্নের সুপারিশ করেছে সাব-কমিটি।
সাব-কমিটির প্রতিবেদনে কোনো অবস্থাতেই দরপত্র ছাড়া কার্যাদেশের মেয়াদ না বাড়ানো, টোল আদায় ব্যবস্থাপনা নিবিড় তদারকি, রাস্তা ও যানবাহনের ধরন এবং পরিমাণের ভিত্তিতে একটি মাস্টার প্ল্যানের আওতায় এনে সড়ক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, বিপজ্জনক বাঁকগুলো সরলীকরণ এবং মহাসড়কে নসিমন-করিমন ও অন্যান্য ব্যাটারিচালিত যান নিষিদ্ধকরণের সুপারিশ করা হয়েছে।
বৈঠকে ‘মহাসড়ক বিল, ২০২১’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংযোজন, সংশোধন ও পরিমার্জনের পর বিলটি পাশের উদ্দেশ্যে সংশোধিত আকারে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য কমিটি সুপারিশ করে। কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এনামুল হক, আবু জাহির, রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক, ছলিম উদ্দীন তরফদার, শেখ সালাহউদ্দিন, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও রাবেয়া আলীম অংশ নেন।