নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তানের এজেন্টরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে যা ইতিহাসের কলঙ্কজনক একটি অধ্যায়। মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজের প্রথম লেকচারে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত একথা বলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বাংলাদেশের পরিপন্থী পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল। তাঁকে হত্যার পরে তারা পাকিস্তান ও লিবিয়ার গাদ্দাফির সমর্থন পায়। কানাডায় বর্তমানে অবস্থানরত নুর চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে গুলি করে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি যে পাচঁ জন পালিয়ে রয়েছে তাদের ফেরত আনা সম্ভব হবে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনই বিশ্বাস করতেন না যে বাংলাদেশের কেউ উনাকে হত্যা করতে পারে। ১৫ আগস্ট রাতে বাইরে আওয়াজ শুনে তিনি রুমের বাইরে বের হলে নুর চৌধুরী গুলি করে এবং তিনি লুটিয়ে পড়েন।
১৯৫৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি গোটা বিশ্বের জন্যই এক বিশাল ব্যক্তিত্ব। কারণ একদম শূন্য থেকে একটি জাতি তৈরি করার সক্ষমতা বঙ্গবন্ধুর ছিল।
বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন মন্ত্রী থাকলে তিনি দেশের জন্য কাজ করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে তার সংস্কৃতি ও ভাষার ওপর ভিত্তি করে গড়তে চেয়েছিলেন এবং ১৯৬২ সালে তিনিই প্রথম নাম দিয়েছিলেন ‘বাংলাদেশ’। জাতি গঠনের জন্য এক বছর ধরে গোটা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু সবাইকে সংঘবদ্ধ করেছিলেন যাতে করে সব বাঙালি বিষয়টি জানতে পারে। মুহিত বলেন, এখানেই তিনি থেমে থাকেননি। তিনি বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য কী হবে সেটির বিষয়ে চিন্তা করেছেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের যে চারটি ভিত্তি তিনিই সেটি ঠিক করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর শেষ কাজ ছিল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া এবং তিনি সফলতার সঙ্গেই সেটি নিতে পেরেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় থাকার সময় নিয়ে তিনি বলেন, এই অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের উৎপাদন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে যে পরিমাণ ছিল তার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। এই সময়ে মধ্যে বঙ্গবন্ধু সংবিধানসহ ৫১৯টি নতুন আইন করেছেন এবং এর মধ্যে মেরিটাইম আইনটি ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৭৪ সালে মেরিটাইম অঞ্চল আইন করা হয় এবং এর আট বছর পরে জাতিসংঘ সুমদ্র সম্পর্কিত আইন তৈরি করে।
২০১৪ সালের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি তখন অর্থমন্ত্রী এবং তখন ১৯৭৪ সালের আইনটি সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন আমরা দেখলাম আইনটি এত বেশি ভবিষ্যৎ চিন্তা করে করা হয়েছিল যে প্রণয়নের ৪০ বছর পরেও এর খুব বেশি সংশোধন করতে হয়নি।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা তৈরি করা এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা আমাকে ১০ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার সুযোগ দিয়েছেন এবং আমার সাধ্যমতো সোনার বাংলা তৈরির জন্য সহায়তা করেছি।