তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : ভেঙে পড়ল জেমস বন্ড খ্যাত পুয়ের্তো রিকোর ঐতিহাসিক টেলিস্কোপটি। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেডিও টেলিস্কোপ। প্রকৌশলীরা সম্প্রতি বিশাল কাঠামোর ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। ইউএস ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (এনএসএফ) গত মাসে ঘোষণা করেছিল যে এটি মেরামত করা হবে। কিন্তু তার আগেই এটি ভেঙে পড়ল।
জেমস বন্ড সিনেমায় টেলিস্কোপটি দেখানো হয়েছিল। এটি একটি অবজারভেটরি টেলিস্কোপ। মঙ্গলবার ৯০০ টনের রিসিভার প্ল্যাটফর্মটি তার ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে পড়ে যায়। রেডিও রিসিভারটি ৩০০ মিটির ব্যাসের ছিল। বেশ কিছু শক্তিশালী তার মাধ্যমে এটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তার ছিড়েই এটি নিচে পড়ে যায়।
এনএসএফের মুখপাত্র রব মারজেটা এএফপিকে বলেছেন, রেডিও টেলিস্কোপটি ছিড়ে নিচে পড়েছে। এতে কোন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
ঐতিহাসিক এই রেডিও টেলিস্কোপটি ১৯৬০ সালে তৈরি করা হয়েছিল। বহু জ্যোতির্বিজ্ঞানের আবিষ্কারের হাতিয়ার ছিল এটি।
জেমস বন্ডের সিনেমায় এখানে একটি অ্যাকশন দৃশ্য চিত্রায়িত হয়েছিল।
আরেসিবোতে পুয়ের্তো রিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যানেটারি হ্যাবিটেবিলিটি ল্যাবরেটরির পরিচালক আবেল মেন্ডেজ বলেছেন, রিসিভারটি মঙ্গলবার সকাল ৮ টা এর কিছুটা আগে পড়েছিল এবং একে সম্পূর্ণ ধসে গেছে। ‘এখান থেকে অনেক শিক্ষার্থী পর্যবেক্ষণে জ্যোতির্বিদ্যায় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তারা আমার মতো বিজ্ঞান এবং জ্যোতির্বিদ্যায় ক্যারিয়ার করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছেন’ তিনি বলেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আরেসিবো টেলিস্কোপের ক্ষতি বিশ্বের জন্য বড় ক্ষতি, তবে এটি পুয়ের্তো রিকোর ক্ষতির চেয়ে বেশি। এটি আমাদের দ্বীপের জন্য একটি আইকন।’
টেলিস্কোপটি আগস্ট অবধি ৫৭ বছর ধরে চালু ছিল এবং বিজ্ঞানীরা সাইটটি বন্ধ করার সিদ্ধান্তের বিপরীতে এনএসএফকে তদবির করেছিলেন।
টেলিস্কোপের সাফল্যের মধ্যে ১৯৯২ সালে প্রথম এক্সোপ্ল্যানেট – সৌরজগতের বাইরের একটি গ্রহ আবিষ্কার করা হয়েছিল এবং ১৯৮১ সালে এটি শুক্রের পৃষ্ঠের প্রথম রাডার মানচিত্র তৈরি করতে সহায়তা করেছিল।
অবজারভেটরিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে দূরবীনটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞান, সৌরজগতের রাডার এবং বায়ুমণ্ডলীয় পদার্থবিজ্ঞানের জন্য সহায়ক ছিল। যা আবিষ্কার, উদ্ভাবন এবং বিজ্ঞানের অগ্রগতি সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করে।”
‘বিশ্বজুড়ে অ্যাস্ট্রোনমি এবং প্ল্যানেটারি সায়েন্স এবং সর্বকালের অন্যতম আইকোনিক টেলিস্কোপের জন্য দুঃখজনক দিন’। নাসা বিজ্ঞান মিশন অধিদপ্তরের সহযোগী প্রশাসক টমাস জুরবুচেন টুইট করেছেন।