ফেনী পৌর শহরের বারাহীপুরে ফেসবুক লাইভে এসে গৃহবধূ তাহমিনা আক্তার(২২)কে কুপিয়ে হত্যার মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গৃহবধূর বাবা ও মামলার বাদী সাহাবউদ্দিন আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান। বৃহস্পতিবার (২১অক্টোবর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালত এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি ওবায়দুল হক টুটুল (৩৭) আদালতে উপস্থিত ছিলেন। টুটুল ফেনী শহরের উত্তর বারাহীপুরের বাসিন্দা। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহমেদ জানান, জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে গত মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট
আবদুস সাত্তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ । এর আগে মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সাইফুদ্দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে গত রোববার মামলার এ পর্ব শেষ করেন আদালত। এ মামলায় বাদী, ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও পুলিশসহ ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ১৫ এপ্রিল শহরের উত্তর বারাহীপুর ভূঞাবাড়ীতে দাম্পত্য কলহের জের ধরে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রী তাহমিনা আক্তারকে হত্যা করে টুটুল। পরে হত্যাকারী টুটুল নিজেই ৯৯৯-এ খবর দিয়ে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে ফেনী মডেল থানা পুলিশ ঘটনা¯’ল থেকে টুটুলকে গ্রেফতার করে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও ফেসবুকে প্রচার চালানো মোবাইল জব্দ করে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আলতাফহোসেন জানান, নিহতের পিতা সাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে গত বছরের ১৬ এপ্রিল ওবায়দুল হক টুটুলকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুদ্দিন ওই দিন আসামিকে আদালতে হাজির করেন। আসামি টুটুল হত্যার দায় স্বীকার করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ধ্রুবজোতি পালের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এসআই সাইফুদ্দিন বদলি হওয়ায় মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই এমরান হোসেনকে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এমরান হোসেন গত বছরের ১৬ নভেম্বর ওবায়দুল হক টুটুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। আদালত একই বছরের ডিসেম্বর মাসে চার্জ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন। এ বছরের ১৩ জানুয়ারি নিহত গৃহবধূর বাবা ও মামলার বাদী সাহাবউদ্দিনের প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।