দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার সৈন্যের সমাবেশ করায় দেশটিতে ব্যাপক মানবাধিকার বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। দেশটি গত ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ সাধারণ পরিষদের কাছে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আমি তথ্য পেয়েছি হাজার হাজার সৈন্য এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র দেশটির উত্তরাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি আশঙ্কা করছি ব্যাপক সহিংসতার প্রস্তুতি নিচ্ছে জান্তা সরকার। আমাদের সবার প্রস্তুত থাকা উচিত।
স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা বলছে, গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানে এক হাজার ১০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার করা হয়েছে ৮ হাজারের বেশি মানুষকে।
এন্ড্রুজ বলেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকার মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধে জড়িত বলে অনুসন্ধানে আলামত পাওয়া গেছে। অ্যান্ড্রুস বলেন, দেশটির জান্তার এই কৌশল ভয়ঙ্করভাবে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর গণহত্যা চালানোর আগের ঘটনাপ্রবাহকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন, পিটিয়ে গুলি করে হত্যা, নারীদের ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এমন নৃশংসতাকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলন থেকে জান্তা প্রধান মিং অং হ্লাইংকে বাদ দেওয়ার কয়েক দিন পরই এই পদক্ষেপ নিল দেশটির জান্তা সরকার।