কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের সেই চার ছক্কার প্রতিশোধ এমনভাবে নেবে ইংলিশরা তা কেউ কল্পনা করতে পেরেছিল। ক্রিকেটের নন্দনকানন সেদিন মরগ্যান, স্টোকস, বাটলারদের চোখের জলে ভিজেছিল। পাঁচ বছর পর দুবাইয়ে সেই হারের প্রতিশোধ-ই মনে হয় নিল তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপে তাদের সর্বনিম্ন রানে (৫৫) অলআউট করে শুরুতেই লজ্জা দেয়। এরপর ম্যাচ জিতে নেয় ৬ উইকেটে, ৭০ বল হাতে রেখে।
২০১৬ বিশ্বকাপ যেখানে শেষ হয়েছিল, ২০২১ বিশ্বকাপ সেখান থেকেই শুরু হলো। পার্থক্য, এবার বিজয়ের মালা পড়ল ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলে কত বড় বড় নাম। একেকজন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ফেরি করে বেড়ান এদেশ ওদেশ। ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো, নিকোলাস পুরান, শিমরন হেটমায়ার। তারা তো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আইকন ক্রিকেটার। অথচ একদিনে সব তারার ছন্দপতন।
৫৫ রানের অলআউটের দিনে শুধুমাত্র ক্রিস গেইলই ৩ চারে দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন। বাকিরা সবাই সিঙ্গেল ডিজিটে সাজঘরে। বাউন্ডারি সংখ্যা বলতেও লজ্জা! গেইলের ৩টি বাদে হেটমায়ার ২টি ও ব্রাভো ১টি চার মারেন। ইনিংসের একমাত্র ছক্কাটি মেরেছেন লুইস।
পাওয়ার প্লে’তে তাদের ব্যাটিং অনেকটাই ঠিকঠাক ছিল। ৩১ রানে হারিয়েছিল ৪ উইকেট। পরের ১৬ বলে ১১ রান যোগ করতেই শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশ্য এর আগেও ইংল্যান্ডের কাছে এমন লজ্জা পেয়েছিল তারা। টি-টোয়েন্টিতেই ইংল্যান্ড তাদের ৪৫ ও ৭১ রানে অলআউট করেছিল।
বোলিংয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ধারাবাহিকতায় এগিয়েছে ইংল্যান্ড। দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিলেন তারা। সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন আদীল রশিদ। ২.২ ওভারে ২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সেরা বোলিংয়ের কীর্তি গড়েছেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট পেয়েছে মঈন আলী ও টাইমাল মিলস। ১টি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও ক্রিস জর্ডান। বোলিংয়ের পাশাপাশি ইংল্যান্ডের ফিল্ডিংও ছিল ধ্রুপদী। ডেভিড মালান, বেয়ারস্টো, বাটলারদের নির্ভার হাতে জমা হয় দারুণ সব ক্যাচ।
অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা ইংল্যান্ডকে সহজে জিততে দেয়নি। তাদেরও চার উইকেট তুলে নিয়েছে। ছয় বছর পর দলে ফেরা পেসার রবি রামপল শুরুতে ফেরান জেসন রয়কে। এরপর ১৪ বলে দ্রুত ৩ উইকেট হারায় তারা। ৪ উইকেট হারানো ইংলিশদের হাল ধরেন মরগ্যান ও বাটলার। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৭ রানের জুটি জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল গতবারের রানার্সআপরা। আর গতবারের চ্যাম্পিয়নরা লজ্জায় ডুবল। বাটলার অপরাজিত থাকেন ২৪ রানে। মরগ্যানে ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। ব হাতে আকিল হোসেন ২ উইকেট পেয়েছেন।