বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ক্ষুধায় হাহাকার করছিল পাকিস্তান। অবশেষে তারা পেল সেই স্বাদ। তবে কাঙ্ক্ষিত জয়টা যে এমন দাপুটে হবে, হয়তো কল্পনাতেও ভাবেনি তারা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে বাবর আজমের দল। ম্যাচ শেষে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির কণ্ঠেও শোনা গেল বিধ্বস্ত হওয়ার সরল স্বীকারোক্তি।
দুবাইয়ে রোববার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে হারায় পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে এত বড় জয়ও দলটির এই প্রথম।
ব্যাটে-বলে মাঠে কেবল দাপট ছিল পাকিস্তানেরই। ভারতের কোনো পরিকল্পনাই কাজে দেয়নি, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে কোহলিও বললেন তাই।
“আমরা যা চেয়েছি সেটা কার্যকর করতে পারিনি। তবে কৃতিত্ব তাদেরই প্রাপ্য। তারা আজ আমাদের উড়িয়ে দিয়েছে।”
টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করে পাকিস্তান। শাহিন শাহ আফ্রিদি পরপর দুই ওভারে বিদায় করেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলকে। ৬ রানে ২ উইকেট হারানো ভারত পাওয়ার প্লেতে হারায় সূর্যকুমার যাদবকেও।
সেখান থেকে দলকে টানেন কোহলি। তার ৫৭ রানের ইনিংসে লড়ার মতো ১৫১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় ভারত। কিন্তু বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান যেন পণ করেই নেমেছিলেন, দিবেন না কোনো উইকেট।
অসাধারণ ব্যাটিং পারফরম্যান্সে তাড়া গুঁড়িয়ে দেন ভারতের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণকে। জাসপ্রিত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, বরুণ চক্রবর্তীরা তৈরি করতে পারেননি তেমন কোনো সুযোগই। বাবর-রিজওয়ানের নিখুঁত ব্যাটিংয়ে তারা হয়ে পড়েন অসহায়।
এতে অবশ্য বোলারদের দায় দেখছেন না কোহলি। শিশিরের প্রভাব থাকবে জেনেও শুরুতে বড় রান করতে না পারাই তাদের ভুগিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তবে কৃতিত্ব দিতে ভুলেননি পাকিস্তানের বোলারদেরও।
“দ্রুত তিন উইকেট পড়ে গেলে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো খুব কঠিন। বিশেষ করে, পরে যখন শিশির প্রভাব ফেলে। তারাও অবশ্য ব্যাট হাতে দারুণ করেছে।”
“তবে পাকিস্তানের ইনিংসে যতটা সহজ মনে হয়েছে, প্রথম ইনিংসে বড় শট খেলা ততটা সহজ ছিল না। তাই যখন জানাই থাকে যে কন্ডিশন পরিবর্তিত হবে তখন আরও ১০-২০ রান বেশি করা প্রয়োজন। তবে পাকিস্তানের মানসম্মত বোলিং আমাদের হাত খুলে খেলতে দেয়নি…”
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে ১৩ বারের দেখায় প্রথম জয়ের স্বাদ পেল পাকিস্তান। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে দুই দলের ৭ বারের লড়াইয়ে ভারত জিতেছে প্রতিটি। আর ২০ ওভারের বিশ্বকাপে আগের ৫ লড়াইয়ে ভারতের সরাসরি জয় ৪টিতে। আরেকটি হয়েছিল টাই। ২০০৭ বিশ্বকাপের সেই টাই ম্যাচেও পরে টাইব্রেকারে হেরে যায় পাকিস্তান।