স্পোর্টস ডেস্ক : জিনেদিন জিদানের খুব প্রিয় একটি শব্দ ‘ফাইনাল’। দল যখন চাপে পড়ে যায়, খেলোয়াড়দের উদ্ধুদ্ধ করতে ফাইনাল শব্দটি উচ্চারণ করেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ। যেমনটা এবারও বলেছেন, আটদিনে রিয়ালকে খেলতে হবে তিনটি ‘ফাইনাল’। এই তিন ফাইনাল হলো শনিবার সেভিয়ার সঙ্গে লা লিগার ম্যাচ, বুধবার বরুসিয়া মনশেনগ্ল্যাডবাখের সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ, পরের শনিবার আবার লা লিগায় আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে মাদ্রিদ ডার্বি।
শনিবার সেভিয়ার মাঠে গিয়ে সেভিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম ফাইনালটি জিতলেন জিদান। চাকরি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাওয়া ফরাসি ফুটবল কিংবদন্তির মুখে একটু হাসি ফুটেছে। শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্নটা ভালোভাবেই ফিরে পেয়েছে চ্যাম্পিয়নরা।
লা লিগায় আলাভেজের কাছে আর চ্যাম্পিয়নস লিগে শাখতার দোনেৎস্কের কাছে টানা দুই হারের পরে এস্তাদিও সানচেজ পিজুয়ানে রিয়াল জিতলো ভাগ্যগুনে। আত্মঘাতী গোল করেছেন সেভিয়া গোলকিপার ইয়াসিন বুনো। তবে ৫৬ মিনিটে গোলটি হয়েছে ভিনিসিয়ুসের আক্রমণের মুখে। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের কোনাকুনি শটটা হাতে ঠিকঠাক জমাতে পারেননি ওপরে উঠে আসা বুনো। বল তার হাতে লেগে দিক বদলে ঢোকে জালে (১-০)। লা লিগায় ২১ শতকের প্রথম আত্মঘাতী গোলটি করলেন মরোক্কান গোলকিপার!
দুই ব্রাজিলিয়ান তরুণ ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোর সঙ্গে করিম বেনজেমাকে দিয়ে আক্রমণভাগ সাজান জিদান। মার্কো আসেনসিওকে বসতে হয়েছে বেঞ্চে। কাসেমিরো ফিরে এসে টনি ক্রুস ও লুকা মদরিচের সঙ্গে মিলে মাঝমাঠটাকে করেন শক্ত। ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোর মধ্যে শুরু থেকেই ছিল আক্রমণের ঝাঁজ, তবে প্রথম গোলের সুযোগ পান ক্রুস। যদিও বুনোকে পরাস্ত করতে পারেননি জার্মান মিডফিল্ডার। সত্যিকারের গোলের সুযোগটা রিয়াল পায় বিরতির সামান্য আগে। যখন ভিনিসিয়ুস ডামি করে বল সাজিয়ে দেন বেনজেমাকে। ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডের বাঁকানো শটটি বুনোই সেভ করেন আঙুলের ডগা ছুঁইয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধে বেনজেমার দারুণ কিছু ঝলক খেলাটিকে পুরোপুরি সেভিয়ার নিয়ন্ত্রণে যেতে দেয়নি। এরইমধ্যে ভিনিসিয়ুসের শট রুখতে গিয়ে তো রিয়ালকেই এগিয়ে দেন বুনো। সেভিয়া এরপরও গোটা দুই সুযোগ পেয়েছে। খেলা শেষের মিনিট কয়েক আগে লুকাস ওকাম্পোসের ওভারহেড কিকটা দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছেন গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া।
যে রক্ষণের কারণে রিয়াল আগের দুই ম্যাচে হেরেছে, ভারান-নাচোদের দৃঢ়তায় সেই রক্ষণই এ ম্যাচে ছিল তাদের শক্তিশালী দিক।
আট দিনের তিন ফাইনালের প্রথমটি জেতা হলো। এখন ম’গ্ল্যাডবাখের বিপক্ষে ‘দ্বিতীয় ফাইনালটা’ জিতলে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত হয়। ভালদেবেবাসে আতলেতিকোর সঙ্গে ‘তৃতীয় ফাইনালে’ জিতলে ফেরা হবে লা লিগার শিরোপা দৌড়ে। যেখানে আপাতত এগিয়ে থাকা দুটি দল রিয়াল সোসিয়েদাদ ও আতলেতিকো। ১১ ম্যাচ খেলে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে সোসিয়েদাদ। ১০ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে আতলেতিকো দুইয়ে গোলের হিসেবে। ১১ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল উঠে দাঁড়ালো তৃতীয় স্থানে। ওই গোলের হিসেবেই সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে চারে ভিয়ারিয়াল।