আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে বড় পরিসরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৯০ বছর বয়সী মার্গারেট কেনান। তিনি নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের এনিস্কিলেন শহরের বাসিন্দা।
এর আগেই দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছিল যে, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) মঙ্গলবার থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করবে। জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে পৌঁছায় মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা। এরপর থেকেই অপেক্ষার প্রহর শুরু হয়।
অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত সময়ের দেখা মিলল। বিশ্বে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে করোনা টিকার কর্মসূচি শুরু হলো। স্থানীয় সময় সকালে কনভেন্ট্রির ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন মার্গারেট। তাকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হয়েছে।
ওই নারী প্রায় ৬০ বছর ধরে কনভেন্ট্রিতে বসবাস করছেন। তিনি একটি গহনার দোকানে চাকরি করতেন। তার বয়স যখন ৮৬ বছর তখন তিনি কাজ থেকে অবসর নেন। মূলত করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন এবং বয়স্ক লোকজনকে আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মার্গারেট বলেন, প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পেরে আমার নিজেকে বিশেষ কেউ মনে হচ্ছে। আর কিছুদনি পরেই তার জন্মদিন। তিনি বলেন, এটা জন্মদিনের আগে সবচেয়ে ভালো উপহার।
যুক্তরাজ্যের প্রায় ৭০টি হাসপাতালে মঙ্গলবার টিকা কর্মসূচির আওতায় করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে স্বাস্থ্যকর্মী, ৮০ বছরের বেশি বয়সী লোকজন ও কেয়ারহোমের কর্মীদেরকেই প্রথম সারিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে লোকজন আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার বেলজিয়াম থেকে ব্রিটেনে এসে পৌঁছায় ফাইজারের তৈরি করোনার টিকা। এর আগে বুধবার মার্কিন সংস্থার তৈরি এই টিকা জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল যুক্তরাজ্য সরকার। তবে টিকা আসার পুরো প্রক্রিয়াটি প্রথমদিকে গোপন রাখে ব্রিটিশ সরকার।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, বেলজিয়াম থেকে ইউরো টানেল হয়ে ব্রিটেনে এসে পৌঁছায় ফাইজারের টিকা। কয়েকটি ট্রাকে করে এগুলো ব্রিটেনে আনা হয়েছে। সে সময় এগুলোর গায়ে কিছু লেখা ছিল না। এরপর ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের কিছু গোপন স্টোরেজে পাঠানো হয়।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। তবে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে এখন পর্যন্ত শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় ব্রিটেনের অবস্থান ৭ম। ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৯৬০। এর মধ্যে মারা গেছে ৬১ হাজার ৪৩৪ জন।