মৈত্রী দিবস উদযাপন উপলক্ষে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, আন্তঃদেশীয় তেলের পাইপলাইন খুব শিগগিরই চালু করা সম্ভব হবে বলে ভারত আশাবাদী। আর এর মধ্যদিয়ে দুদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শ্রিংলা।
এরই মধ্যে স্থাপিত বিদ্যুতিক লাইনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এসময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশের এলপিজি রপ্তানির কথাও তুলে ধরেন।
১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পাইপলাইনের নাম দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন। এটি স্থাপন করা হচ্ছে ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিজেল সরবরাহের জন্য। বিজনেস লাইন
দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পাইপলাইন নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন। তবে নির্মাণ শুরু হয় উদ্বোধনের দুবছর পর, ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর। ইন্ডিয়া টাইমস
২০২২ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কাজ শেষ হলে ভারতের শিলিগুড়ির নুমালীগড় তেল শোধনাগার থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।
এই পাইপলাইনের ১২৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে, আর ভারতের অংশে পড়েছে বাকি ৫ কিলোমিটার। ২২ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন তেল সরবরাহ করা যাবে। ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
পাইপ লাইন তৈরি হয়ে গেলে প্রাথমিকভাবে বছরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত থেকে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা চার লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করা হবে।
৫২০ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতের গ্রান্ড এইড প্রোগ্রামের আওতায় পাওয়া যাবে ৩০৩ কোটি রুপি। আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বাপেক্স) ১৫০ কোটি টাকার যোগান দেবে।
বাংলাদেশ এখন প্রতি মাসে নুমালীগড় তেল শোধনাগার থেকে ১২ হাজার কিলোলিটার ডিজেল আমদানি করে। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আনা হয় এই তেল। এরপর নদী ও সড়কপথে ঢাকা হয়ে উত্তরাঞ্চলে পাঠানো হয়। পাইপলাইন হয়ে গেলে তেল পরিবহনের ঝক্কি থেকে মুক্তি মিলবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ওপরও চাপ কিছুটা কমবে। সর্বোপরি খরচ কমবে।
দ্য হিন্দু বিজনেসের খবর অনুযায়ী, বর্তমানে ডিজেল পরিবহনে রেলপথে প্রায় ৫১০ কি:মি: পাড়ি দিতে হয়, সেখানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই দূরত্ব প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কমে আসবে। পাশাপাশি সরকারের জ্বালানী পরিবহনখাতে উল্লেখযোগ্য হারে ব্যয়ও অনেকাংশে কমে আসবে।