সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। তবে পতনের বাজারেও শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ বেড়ে ছয় কোম্পানির বিক্রেতা উধাও হয়ে গেছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা না গড়াতেই পতনের মধ্যে পড়ে বাজার। আর লেনদেনের শেষ দিকে পতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকলেও লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে ভিন্নচিত্র দেখা যায় এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, আরামিট লিমিটেড, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, মুন্নো এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারি, রহিম টেক্সটাইল মিলস ও সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের।
এই ছয় কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে দিনের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যায়। এরপরও লেনদেনের শেষ দিকে এই ছয় কোম্পানির শেয়ার কেনার আগ্রহ দেখিয়েও কিনতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা। দিনের সর্বোচ্চ দামে শেয়ার ক্রয়ের আদেশ থাকলেও এই ছয় কোম্পানির শেয়ারের বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে যায়।
দিনের লেনদেন শেষে এমবি ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৪৮৬ টাকা ৯০ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ৪৪৭ টাকা ৮০ পয়সা। আরামিট লিমিটেডের শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩৫৩ টাকায়, যা আগের দিন ছিল ৩২৪ টাকা ৬০ পয়সা। ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের শেয়ারের দাম ২ হাজার ৬১৮ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৭৪৯ টাকা ১০ পয়সা হয়েছে।
অন্য তিন কোম্পানির মধ্যে মুন্নো এগ্রো অ্যান্ড জেনারেলের শেয়ারের দাম ৫৭৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে ৬১৮ টাকা হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে রহিম টেক্সটাইলের শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২৮০ টাকা ৬০ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ২৫৮ টাকা ১০ পয়সা। সোনালী পেপারের শেয়ারের দাম ৬৪২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে ৬৯১ টাকা ১০ পয়সা হয়েছে।
এই ছয় কোম্পানির শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও সার্বিক বাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম বেড়েছে ৯৯টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯২০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬০৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সূচকের বড় পতন হলেও বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৪৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১০৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। ৪৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাইফ পাওয়ার।
এছাড়াও ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, ফরচুন সুজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জিএসপি ফাইন্যান্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৯৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৯টির ও ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।