ওমিক্রনের দাপটের মধ্যে ভারতে টানা ষষ্ঠ দিনের মত বেড়েছে দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৩৩ হাজার ৭৫০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা ১৮ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ।
রবিবার ভারতে ২৭ হাজার ৫৫৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, তার আগের দিন সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২২ হাজার ৭৭৫ জনের মধ্যে।
সব মিলিয়ে ভারতে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ কোটি ৪৯ লাখে।
গত একদিনে সেখানে আরও ১২৩ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃত্যু পৌঁছে ৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৯৩ জনে।
অবশ্য অনেকেই নমুনা পরীক্ষার বাইরে থেকে যান বলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎগতিতে ছড়াতে থাকা করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভারতেও সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে।
হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে ভারতের ২৩ রাজ্যে পৌঁছে গেছে ওমিক্রন। গত নভেম্বরে ওমিক্রনের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে ভারতে এ পর্যন্ত এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৫২৫ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৫৬০ জনই মহারাষ্ট্র আর দিল্লির বাসিন্দা।
নয়া দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতার মত ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে মহামারী পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দ্রুত। পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি রাজ্যে আবার কোভিড বিধিনিষেধ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে ধর্মীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মুম্বাইয়ে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
পশ্চিমবঙ্গে গত সাত দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১৪ গুন। সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে দিল্লি আর মুম্বাইয়ের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ফ্লাইট কমিয়ে আনা হয়েছে। লোকাল ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা আসন সংখ্যার অর্ধেকের মধ্যে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল কলেজে।
হরিয়ানার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সামাজিক, ধর্মীয় আর রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে জমায়েতের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ জনের সীমা টেনে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
একই ধরনের বিধিনিষেধ এসেছে তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, গুজরাট আর কর্ণাটকেও।
গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের এ ধরনটি ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ১০৬টি দেশে। ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে আধিপত্য বিস্তার করেছে ওমিক্রন।
ভারতে সোমবার থেকেই ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী, ফ্রন্টলাইনার আর ঝুঁকিতে থাকা জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে।