একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মধ্যেই এবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পিয়ংইয়ংয়ের সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বুধবার উত্তর কোরিয়ার পাঁচ কর্মকর্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হাতে পেতে উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তাদের ভূমিকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়াও উত্তর কোরিয়ার আরও এক ব্যক্তি, এক রুশ নাগরিক এবং রাশিয়ার একটি কোম্পানির বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ। অভিযুক্ত এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পিয়ংইয়ংয়ের গণবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত পাঁচজন উত্তর কোরীয় নাগরিকের মধ্যে একজন বর্তমানে রাশিয়ায় এবং অন্য চারজন চীনে অবস্থান করছে। তাদের সকলের বিরুদ্ধেই উত্তর কোরিয়ার সেকেন্ড অ্যাকাডেমি অব ন্যাচারাল সায়েন্সে অর্থ, পণ্য বা অন্যান্য সেবা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে, যা মূলত দেশটির সামরিক প্রতিরক্ষা কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে বুধবার উত্তর কোরিয়া জানায়, পিয়ংইয়ংয়ের সর্বশেষ উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল একটি হাইপারসনিক মিসাইল। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের উপস্থিতিতে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয় বলে দাবি করে দেশটি।
মঙ্গলবার নিক্ষেপ করা এই ক্ষেপণাস্ত্রটির গতি শব্দের চেয়ে ঘণ্টায় ১০ গুণ বলে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইয়োনহাপ। আর গত সপ্তাহে উৎক্ষেপিত মিসাইলটির গতি ছিল শব্দের গতির চেয়ে ছয় গুণ বেশি।
বুধবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, মঙ্গলবার নিক্ষেপ করা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় এক হাজার কিলোমিটার (৬২১ মাইল) দূরের একটি লক্ষ্যবস্তুতে ‘সফলভাবে আঘাত’ হেনেছে।
সর্বশেষ এই পরীক্ষাসহ এনিয়ে তৃতীয়বারের মতো হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের এই দেশটি। এর মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানেই দু’বার শব্দের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালেন কিম।
অবশ্য নতুন বছরের শুরুতেই দেওয়া ভাষণে পিয়ংইয়ংয়ের প্রতিরক্ষা শক্তি আরও জোরদারের ঘোষণা দিয়েছিলেন কিম জং উন। আর সেই অনুযায়ী একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার গতিতে রাশ টানা হয় কি না সেটিই এখন দেখার বিষয়।