চট্টগ্রামের সাগরিকার পাড়ে হিম হিম শীতে হঠাৎ করেই উত্তাপ। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজকে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই রোববার (৩০ জানুয়ারি) রাগে-ক্ষোভে চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে আর খেলবেন না বলে সাফ সাফ জানিয়ে দেন এ অলরাউন্ডার। এরপর বায়োবাবল ভেঙে টিম হোটেল থেকে বের হয়েও আসেন তিনি।
যদিও দিনভর নাটকীয়তার পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সঙ্গে মিরাজের দ্বন্দ্বের অবসান হয়। মিরাজের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানান ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বত্ত্বাধিকারী কে এম রিফাতুজ্জামান। দলে ছেড়ে যেতে চাওয়া মিরাজও দলের সঙ্গে থাকছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কুমিল্লার বিপক্ষে ম্যাচেও ছিলেন তিনি।
এদিকে সরাসরি স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ না তুললেও অধিনায়কত্ব হারানোর পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স সিইও ইয়াসির আলমের বিপক্ষে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ায় হতাশ এবং ক্ষুব্ধ মিরাজ চট্টগ্রাম ম্যানেজমেন্টের কারো কারো আচরণ সন্দেহজনক বলেও মন্তব্য করেন। যদিও পরে টিমের সঙ্গে তার দফারফা হয়। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট ও সিইওর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেও শেষ পর্যন্ত মিরাজ দলের সঙ্গে থেকে যাওয়ায় এ নিয়ে আলোচনা বাড়ছে।
সত্যিই কি ফিক্সিংয়ের ব্যাপার ছিল? চট্টগ্রাম ম্যানেজমেন্টের কেউ কী এমন কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত? এমন প্রশ্নও মাথাছাড়া দিচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে মিরাজ ইস্যুতে এবার নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)।
সোমবার গণমাধ্যমকে বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান শেখ সোহেল বলেন, মিরাজের মতো জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত। তার অপেক্ষা করা উচিত ছিল। এ ছাড়া ফ্রাঞ্চাইজিরও দোষ আছে। কাউকেই আমরা ছেড়ে দেব না। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে ঢাকায় ফেরার পর দুই পক্ষেরই শুনানি হবে।
এদিকে একই কথা বললেন বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার চৌধুরী মল্লিকও। তিনি বলেন, কোনো পক্ষের দোষ বা ত্রুটি প্রমাণিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা করার এখতিয়ার আছে বোর্ডের। প্রয়োজনে আইসিসির ‘অ্যান্টি করাপশন ইউনিট’ আকসুর মাধ্যমেও তদন্ত করা হবে।
তিনি বলেন, শাস্তি অবশ্যই পেতে হবে। কিন্তু প্রথমে দেখব ভুল বোঝাবুঝি কি না। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তাদের নিজস্ব কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সম্মান রেখে তো করতে হবে। এমন না হলে অবশ্যই প্রশ্ন চলে আসে। আমরা ঘটনা তদন্ত করে দোষী মালিকপক্ষকে ভবিষ্যতে না-ও রাখতে পারি। কিন্তু এটা পূর্ণ সমাধান না।