করোনা মহামারির মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে ভারতে বাজেট পেশ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পার্লামেন্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এই বাজেট পেশ করেন। প্রস্তাবিত এই বজেটে ভারতকে আত্মনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেশটির বাজেটের এই চিত্র উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বাজেট পেশের সময় লোকসভায় আর্থিক প্রবৃদ্ধির পথে ফেরার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ‘আত্মনির্ভর’ ভারতে আগামী পাঁচ বছরে বিপুল কর্মসংস্থান হবে বলেও জানান তিনি।
বাজেটে একের পর এক বড় ঘোষণাও করেন দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন, একবছরের মধ্যে ফাইভ জি স্পেকট্রাম নিলাম হবে দেশে।
ফাইভ জি স্পেক্ট্রাম নিলাম নিয়ে সীতারামন এদিন সংসদে বলেন, ‘বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি যাতে দেশে ফাইভ জি মোবাইল পরিষেবা শুরু করা যায়, সেই লক্ষ্যে চলতি বছরেই প্রয়োজনীয় স্পেকট্রাম নিলাম করা হবে। সমস্ত গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের কাজ ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। অ্যানিমেশন, ভিজ্যুয়াল এফেক্টস, গেমিং এবং কমিকসের প্রচারের জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। এই টাস্ক ফোর্সের লক্ষ্য ভিজ্যুয়াল এবং অ্যানিমেশন সেক্টরে যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করা।’
এদিন বাজেট পেশের সময় সীতারামন কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। ড্রোনের মাধ্যমে সার দেওয়া হবে। কৃষির জন্য স্টার্ট-আপ গড়ে তুলতে নাবার্ড অর্থ প্রদান করবে। জৈবকৃষির জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে।’ এদিকে শুধু কৃষি ক্ষেত্রে নয় অন্যান্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও ড্রোন ব্যবহার করা যাবে বলে ঘোষণা করেন নির্মলা সীতারামন। এদিকে আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্য পূরণের জন্য উৎপাদন সংক্রান্ত বিশেষ উৎসাহ বা ইনসেনটিভ প্রকল্পে দারুণ সাড়া মিলেছে। তার মাধ্যমে ৬০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে আশা করা হচ্ছে। সঙ্গে বাড়তি ৩০ লাখ কোটি উৎপাদন হবে।
নতুন অর্থবছরে ভারতের বাজেটে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন রুপি। ঘাটতি ধরা হয়েছে জিডিপির ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
ভারতীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি, রাসায়নিক, ওষুধে এতদিন দিয়ে আসা অন্তত ৩৫০টি শুল্কছাড় প্রত্যাহার করা হচ্ছে। মূলধনী পণ্যের ওপর রেয়াতি শুল্কও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে। প্রাথমিকভাবে এর হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে ইলেক্ট্রনিক পণ্য উৎপাদনে শুল্কছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ক্যামেরা-হেডফোনের মতো মোবাইল ফোন যন্ত্রাংশ উৎপাদনে এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
ক্ষুদ্র ও মধ্যম ব্যবসার সুবিধার্থে স্টিল স্ক্র্যাপ আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। স্টেইনলেস স্টিল, ফ্ল্যাট পণ্য ও হাই স্টিল বারে আমদানি শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেওয়া হচ্ছে।
কী বাড়ল, কী কমলো
দাম কমছে
পোশাক ও চামড়াজাত দ্রব্য
বৈদ্যুতিন সামগ্রী
মোবাইল ফোন
মোবাইল ফোনের চার্জার
মেথানল-সহ নির্দিষ্ট রাসায়নিক
ইমিটেশন জুয়েলারি
হিরার গয়না
দাম বাড়ছে
ছাতা
আমদানিকৃত দ্রব্য