হাজারো দুঃস্বপ্নের মধ্যে আশার আলো খুঁজে দেখতে পারেন স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা সমর্থকরা। অন্তত ভ্যালেন্সিয়ার মাটিতে গিয়ে স্বাগতিকদের গুঁড়িয়ে দেয়া ম্যাচটি নিভু নিভু বার্সার প্রদীপে আলো ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট।
লা লিগায় অ্যাওয়ে ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে খুশি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা। জোড়া গোল করেন আর্সেনাল থেকে কাতালানে যোগ দেয়া পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং।
মেসি-গ্রিজমানদের হারিয়ে শক্তি হারানো দলটির সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা হয়ে উঠেছে যথেষ্ট আক্রমণ করেও সুযোগ কাজে লাগাতে না পারা। তবে এদিনের বার্সেলোনা ছিল ভিন্ন; প্রথমার্ধে তারা তিন শট নিয়ে সবকটিই রাখে লক্ষ্যে এবং প্রতিটিই গোল। দ্বিতীয় অর্ধেও তারা শট নেয় তিনটি এবং এবারও সবই ছিল লক্ষ্যে।
গত রবিবার লা লিগায় এস্পানিওলের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের গোলে কোনোমতে হার এড়ানোর (২-২ ড্র) পর বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগে নাপোলির বিপক্ষেও পিছিয়ে পড়ে ১-১ ড্র করে বার্সেলোনা। সেরি আর দলটির বিপক্ষে জানুয়ারিতে দলে আসা ফেররান তরেস, আদ্রামা ত্রাওরে ও অবামেয়াংকে নিয়ে আক্রমণভাগ সাজিয়েছিলেন কোচ। একেবারেই যা কাজে আসেনি। পুরোটা সময়ই তিনজনের মধ্যে বোঝাপড়ার ঘাটতি ছিল স্পষ্ট।
নতুন পরিকল্পনায় ত্রাওরেকে বেঞ্চে বসানোসহ মোট পাঁচটি পরিবর্তন এনে এই ম্যাচে দল সাজান শাভি। শুরু থেকে তা কার্যকর হতেও দেখা যায়। নিজেদের চিরচেনা কৌশলে বল দখলে রেখে খেলতে থাকে তারা। ২৩তম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগে কাঙ্ক্ষিত গোলও পেয়ে যায় দলটি।
বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার উঁচু করে বাড়ানো বল প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল শটে কাছের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন অবামেয়াং। জানুয়ারিতে আর্সেনাল ছেড়ে কাম্প নউয়ে আসা গ্যাবনের স্ট্রাইকারের এটি বার্সেলোনার জার্সিতে প্রথম গোল।
তিন মিনিট পরই মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের ভুলে বার্সেলোনার জালে বল পাঠান হোসে লুইস গায়া। তবে ভালেন্সিয়ার এই ডিফেন্ডার অফসাইডে থাকায় বেঁচে যায় সফরকারীরা।
৩২তম মিনিটে দারুণ পাসিং ফুটবলে গড়া আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডি ইয়ং। ছয গজ বক্সের ডান দিক থেকে উসমান দেম্বেলের গোলমুখে বাড়ানো বল টোকায় জালে পাঠান ডাচ মিডফিল্ডার।
ছয় মিনিট পর নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন অবামেয়াং। ডান দিক দিয়ে ওঠা আক্রমণে সের্জিনো দেস্তের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে দেম্বেলে বল বাড়ান ডি-বক্সে গাভিকে। তরুণ এই মিডফিল্ডারের গোলমুখে বাড়ানো বল অনায়াসে টোকায় বাকি কাজ সারেন অবামেয়াং।
তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার মিনিট দুয়েক পরই জালে বল পাঠায় স্বাগতিকদের কার্লোস সলের। কিন্তু তার আগে দেস্তের সঙ্গে গায়ার পজেশন দখলের লড়াইয়ে বল চলে গিয়েছিল মাঠের বাইরে। স্কোরলাইনে তাই কোনো পরিবর্তন আসেনি।
অবশেষে ৫২তম মিনিটে গোল পায় ভালেন্সিয়া। ব্রায়ানের ক্রসে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সলের। তাদের সেই স্বস্তি অবশ্য খানিক বাদেই উবে যায়। ৬৩তম মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন দুই মিনিট আগেই ডি ইয়ংয়ে বদলি নামা পেদ্রি।
আবার তিন গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া ভালেন্সিয়া বাকি সময়ে আক্রমণ করে অনেক। সুযোগও তৈরি করে; কিন্তু জালের দেখা আর পায়নি।
দারুণ এই জয়ে লিগ টেবিলে শীর্ষ চারে ফিরল বার্সেলোনা। ২৪ ম্যাচে ১১ জয় ও ৯ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট হলো ৪২। সমান পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে এক ম্যাচ বেশি খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদ। আতলেতিকোর সমান ২৫ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল। ৬ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে সেভিয়া। ২৪ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রিয়াল বেতিস।