রিয়াল মাদ্রিদের শুরুর চাপ সামলে পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াল রায়ো ভাইয়েকানো। ম্যাচজুড়ে দুই গোলরক্ষকের কাটল ভীষণ ব্যস্ত সময়। কিন্তু গোলের দেখা আর মেলে না। শেষ দিকে গিয়ে ভিনিসিউস জুনিয়রের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ব্যবধান গড়ে দিলেন করিম বেনজেমা। ভাইয়েকানোর মাঠে শনিবার লা লিগার জমজমাট ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল।
ম্যাচ শুরু হতেই এগিয়ে যেতে পারত রিয়াল। দানি কারভাহালের পাস ধরে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান মার্কো আসেনসিও। তার শট দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। আক্রমণের ধারা ধরে রেখে প্রথম ১০ মিনিটে আরও দুটি ভালো সুযোগ পায় সফরকারীরা; কিন্তু আসেনসিও আবার ওয়ান-অন-ওয়ানে ব্যর্থ হওয়ার পর ভিনিসিউস বক্সের বাইরে থেকে নেন লক্ষ্যভ্রষ্ট শট।
প্রতিপক্ষের চাপে দিশেহারা না হয়ে ভাইয়েকানোও শুরু করে পাল্টা আক্রমণ। ১১ মিনিটে ডান দিক থেকে তাদের ফরোয়ার্ড বেবের শট লাগে পাশের জালে। চলতে থাকে দুই দলের একের পর এক আক্রমণ। ২৪তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আসেনসিওর নেওয়া জোরাল শট লক্ষ্যেই ছিল। কিন্তু এবারও বাধা হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক জিদান; ঝাঁপিয়ে কোনোমতে হাত ছুঁয়ে বল পাঠান বাইরে। তিন মিনিট পর ভাইয়েকানোর ফরোয়ার্ড সের্হি গুয়ার্দিওলা দারুণ পজিশনে বল পেয়েও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
৪০তম মিনিটে জালে বল পাঠান কাসেমিরো, তবে তিনি অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। পাঁচ মিনিট পর এবার গোলরক্ষককে একা পান বেনজেমা; কিন্তু তার হেডও রুখে দেন জিদান।
প্রথমার্ধের লড়াই কতটা জমজমাট ছিল, তার একটা প্রমাণ মেলে এই সময়ে দুই দলের গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টায়। ভাইয়েকানো ১৩ শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে তিনটি আর রিয়ালের আট শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।
বিরতির পরও লড়াইয়ের তীব্রতা কমেনি একটুও। ৫১তম মিনিটে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও ভিনিসিউস কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। তার শট রক্ষণে প্রতিহত হয়। তিন মিনিট পর থিবো কোর্তোয়ার নৈপুণ্যে বেঁচে যায় রিয়াল; মারিও সুয়ারেসের হেড কোনোমতে এক হাত দিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গোলরক্ষক।
আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ একইভাবে চললেও পরের ২৫ মিনিটে কেউ কোনো উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
৮০তম মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। জটলার মধ্যে বল পায়ে কোনোমতে শট নেন অস্কার ত্রেহো। কোর্তোয়া পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন। আলগা বল পেয়ে আলভারো গার্সিয়ার পাল্টা শটও ছুটে গিয়ে ঠেকান বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
এর তিন মিনিট পর কাঙ্ক্ষিত গোলটির দেখা পায় রিয়াল। ডি-বক্সে ভিনিসিউসকে ছোট পাস দিয়ে সামনে এগিয়ে যান বেনজেমা। গোলরক্ষককে এগিয়ে আসতে দেখে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিরতি পাস দেন বেনজেমাকে। অনায়াসে ফাঁকা জালে বল পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
অনেকটা সময় জাল অক্ষত রেখে এবং দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেও এমন হার ভাইয়েকানোর জন্য নিশ্চিতভাবেই খুব হতাশার। পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে শট নেওয়ায় তারা অনেক এগিয়ে; ১৯ শটের পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে তারা। যেখানে রিয়ালের ১৩ শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৬টি।
এই জয়ে সেভিয়ার সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়াল রিয়াল। ২৬ ম্যাচে ১৮ জয় ও ৬ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৬০। এক ম্যাচ কম খেলা সেভিয়া ৫১ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে। সমান ২৫ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রিয়াল বেতিস। ২৪ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে বার্সেলোনা। আতলেতিকো মাদ্রিদ সমান পয়েন্ট নিয়ে আছে তার পরেই। তবে একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে শিরোপাধারীরা। ২৫ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে আছে ভাইয়েকানো।