প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিডনি রোগ একটি নীরব ঘাতক। সুস্বাস্থ্যের জন্য সুস্থ কিডনির বিকল্প নেই। অনেক কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য। কিডনি রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসার বিষয়ে সরকার যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি আশা করেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও তাদের নেওয়া কর্মসূচির মাধ্যমে কিডনি রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবেন।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ‘বিশ্ব কিডনি দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুস্থ কিডনি সবার জন্য- জ্ঞানের সেতুবন্ধনে সাফল্য’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ ও কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকিহ্রাস পাবে। কিডনি রোগের সব আধুনিক চিকিৎসা এখন আমাদের দেশেই সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। আমাদের সরকার জাতীয় কিডনি রোগ ইনস্টিটিউটে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে এবং নতুন ভবন নির্মাণ করেছে। দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ও জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যাবিশিষ্ট ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। আমরা স্বল্পমূল্য ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা করেছি এবং কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ নেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছি এবং এই নীতি বাস্তবায়ন করছি। আমাদের সরকার নতুন মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল, হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে। সাধারণ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ও চিকিৎসা সেবা বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। পিএসসির মাধ্যমে নতুন কয়েক হাজার চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের ফলে আমরা স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছি, যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।