ম্যাচের শুরু থেকে দারুণ চাপ বাড়াল জুভেন্টাস। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে তুলল প্রতিপক্ষের রক্ষণ। ঘর সামলাতে হিমশিম খাওয়া ভিয়ারিয়াল শেষ দিকে হানল প্রবল আঘাত। সাবেক ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের সব আশা গুঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল স্প্যানিশ ক্লাবটি।
আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে ৩-০ গোলে জিতেছে ভিয়ারিয়াল। প্রথম লেগ ১-১ ড্র হওয়ায় দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলের অগ্রগামিতায় পরের ধাপে পা রাখল তারা।
লড়াইটা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল, যে প্রচণ্ড আক্রমণ করছিল জুভেন্টাস, সেসব বিবেচনায় ভিয়ারিয়ালের জয়টাকে বিস্ময়কর বললেও কম বলা হয়। পরিসংখ্যানেও যার প্রমাণ মেলে। ম্যাচের প্রথম ৭৫ মিনিটে জুভেন্টাস গোলের উদ্দেশ্যে ১৪টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে ৫টি। এই সময়ে ভিয়ারিয়ালের চার শটের একটিও ছিল না লক্ষ্যে। সেখানে বাকি সময়ে আরও চারটি শট নিয়ে তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা এবং তিনটিই গোল!
প্রথম লেগে ৩২ সেকেন্ডের মাথায় এগিয়ে যাওয়া জুভেন্টাস এবার গোল পেতে পারত একাদশ মিনিটে। কাছ থেকে আলভারো মোরাতার জোরাল হেড ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলি। তিন মিনিট পর আবারও সুযোগ পান মোরাতা। কিন্তু ডি-বক্সে বল পেয়েও শট নেওয়ার জন্য যথেষ্ট ক্ষিপ্র হতে পারেননি তিনি। ২০তম মিনিটে দূর থেকে দুসান ভ্লাহোভিচের নেওয়া বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ফেরান রুলি।
প্রবল চাপ তৈরি করা জুভেন্টাসের সামনে দুই মিনিট পর দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রথম লেগের গোলদাতা ভ্লাহোভিচের শট ক্রসবারে লাগে। প্রবল চাপ সামলে ২৩তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়ায় ভিয়ারিয়াল। কিন্তু জিওভানি লো সেলসোর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
বিরতির পরও একইভাবে চাপ ধরে রাখে জুভেন্টাস, কিন্তু সাফল্য মিলছিল না। ৫৮তম মিনিটে আদ্রিওঁ রাবিও দূর থেকে চেষ্টা করেন, তবে তার সোজাসুজি শট ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষকের।
খেলার ধারার বিপরীতে ৭৮তম মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন মরেনো। ডি-বক্সে ফরাসি মিডফিল্ডার কোকেলিনকে ডিফেন্ডার দানিয়েলে রুগানি ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। খানিক আগেই বদলি নামা স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের স্পট কিক প্রায় ঠেকিয়েই দিয়েছিলেন ভয়চেখ স্ট্যাসনি, বল তার হাত ছুঁয়ে জালে জড়ায়।
সাত মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পাও তরেস। কর্নারে উড়ে আসা বল হেডে পেছনে গোলমুখে বাড়ান সের্গে অরিয়ের। আর বিনা বাধায় ফ্লিকে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান স্প্যানিশ ডিফেন্ডার।
তারপরও স্বাগতিকদের ঘুরে দাঁড়ানোর যা একটু ক্ষীণ আশা ছিল, তা শেষ হয়ে যায় যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দানজুমার সফল স্পট কিকে। ডি-বক্সে মাটাইস ডি লিখটের হাতে বল লাগলে দ্বিতীয় পেনাল্টিটি পায় সফরকারীরা।
এই নিয়ে টানা তিনবার ইউরোপ সেরার মঞ্চে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে গেল জুভেন্টাস।