অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী ও অভিনেতা আফরান নিশোসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে করা মামলার সত্যতা পায়নি তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সত্যতা খুঁজে না পাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) নূরুননবী সরকার।
নাটক এবং টেলিভিশনের একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক’ শব্দ ব্যবহার করায় এ মামলা করা হয়।
এদিকে একই ঘটনায় ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে করা মামলারও সত্যতা পায়নি পিবিআই। সত্যতা খুঁজে না পাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম (বাবুল)।
রোববার (২০ মার্চ) আদালত সূত্রে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি জানা গেছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। ১৬ মার্চ মামলাটির তারিখ ধার্য ছিল। ওইদিন এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল করার জন্য সময়ের আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। আদালত ২৮ এপ্রিল নারাজি দাখিলের তারিখ ধার্য করেছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ১১ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বকর ছিদ্দিকীর আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেন প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মী বশির আল হোসাইন। আদালত শুনানি শেষে মামলা দুটি পিআইবিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
প্রথম মামলাটি করা হয় ‘ঘটনা সত্য’ নামের একটি নাটক নিয়ে, যা চ্যানেল আইয়ের ঈদুল আজহার আয়োজনে ২৩ জুলাই প্রচার করা হয়েছিল।
মামলার আসামিরা হলেন অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী, অভিনেতা আফরান নিশো, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, নাটকের চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু ও পরিচালক রুবেল হাসান।
দ্বিতীয় মামলাটি করা হয়েছে চ্যানেল আইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান ‘টু দ্য পয়েন্ট’র ১১ জুলাইয়ের পর্ব নিয়ে। যেখানে একজন আলোচকের কথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘নেতিবাচক ধারণা’র প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ মামলার আসামিরা হলেন ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী জাহিদ নেওয়াজ খান, প্রযোজক রাজু আলিম, উপস্থাপক সোমা ইমলাম ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকে দেখানো সংলাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের বাবা-মা এবং পরিবারকে ‘ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
দ্বিতীয় মামলায় বাদীর অভিযোগ ‘টু দ্য পয়েন্ট’ অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের খেলা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের একটি মন্তব্য নিয়ে।
সেখানে অভিযোগ করা হয়, ওই টকশোতে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমার নিজের ছেলেটারে প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা আমি এখন আর্জেন্টিনার ছেলে এবং ব্রাজিলের ছেলে নিয়া লাফাচ্ছি। লাফানো ঠিক আছে। আমরা অনেক ছোটবেলা থেকে ম্যারাডোনার ভক্ত, কিন্তু নিজের ছেলেটারে এভাবে প্রতিবন্ধী বানাবো?’