যুদ্ধ থামাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে ও উভয় পক্ষই একটি সমঝোতা চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক।
রোববার (২০ মার্চ) তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ আন্টালিয়া থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাভুসোগলু একটি লাইভ অনুষ্ঠানে রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তি নিয়ে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, যখন যুদ্ধ চলছে ও বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছে, তখন চুক্তিতে আসা সহজ ব্যাপার নয়। তবে আমরা বলতে চাই যে এখনও চুক্তি করার সুযোগ রয়েছে।
কাভুসোগলু বলেন, তুরস্ক দুই দেশের আলোচনাকারী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তবে তিনি আলোচনার বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করে বলেন, আমরা এক্ষেত্রে একটি প্রতিশ্রুতিশীল মধ্যস্থতা ও সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করছি। তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি দুই পক্ষই (রাশিয়া ও ইউক্রেন) সমঝোতা চুক্তির ব্যাপারে অনেকদূর এগিয়েছে।
তু্র্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেন ছয়টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। এগুলো হলো- ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা, নিরস্ত্রীকরণ ও নিরাপত্তা সুরক্ষা, তথাকথিত নাৎসি মুক্তকরণ, ইউক্রেনে রাশিয়ান ভাষা ব্যবহারের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, বিচ্ছিন্নতাকামী ডনবাস অঞ্চল ও ২০১৪ সালে রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়ায় স্বতন্ত্র সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন।
তুরস্ক জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা উভয় পক্ষের শান্তির জন্য দিনরাত কাজ করছি।
চলতি (মার্চ) মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু তুর্কি রিসোর্ট শহর আন্টালিয়াতে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। তবে এ বৈঠকের পর কোনো ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত হয়নি।
তাছাড়া তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, তুরস্ক রাশিয়া বা ইউক্রেন, কোনো পক্ষের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিন্ন করবে না। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারাটা এই মুহূর্তে আঙ্কারার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেও জানান তিনি। এখন পর্যন্ত আঙ্কারা রাশিয়ার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বা তার আকাশসীমাও বন্ধ করেনি। তবে দেশটি কৃষ্ণ সাগরকে ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে সংযোগকারী তুর্কি প্রণালী বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ চলাচল বিঘ্ন হবে।