1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশকে নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ। কাজেই এ দেশ নিয়ে কিংবা এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ কোনো খেলা খেলতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আর কেউ কোনো খেলা খেলতে পারবে না। মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ কখনো ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।

বাংলাদেশ যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, ইনশাআল্লাহ সেভাবেই এগিয়ে যাবে। ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সমাপনী উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাতে আয়োজিত চার দিনব্যাপী ‘জয় বাংলার জয়োত্সব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মন্ত্রিসভা কমিটি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ রূপকল্প ২০২১ নির্ধারণ করে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ে তোলার যে ঘোষণা দিয়েছিল, সে অনুযায়ী আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয়, গড় আয়ু ও সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সবচেয়ে বড় কথা, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আজ শতভাগ বিদ্যুত্ দেওয়ার মাধ্যমে সব ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালানোর মাধ্যমে আমরা আলোর পথে যাত্রা করতে সক্ষম হয়েছি। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১-এর বাংলাদেশ কেমন হবে, সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও আমরা প্রণয়ন করে দিয়ে গেছি এবং পাশাপাশি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করেও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ১০০ বছরের জন্য ডেল্টা প্ল্যান করে তার কিছু কিছু আমরা বাস্তবায়ন করে দিয়ে যাচ্ছি, যাতে এই বদ্বীপ অঞ্চলের মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম সুন্দর ও উন্নত জীবন পেতে পারে। ’

সবার জন্য অন্তত একটি ঘর করে দেওয়ার তাঁর সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশে একটি মানুষও আর ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না এবং ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা নিশ্চিত করব। এ পথে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি এবং এভবেই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট করেছি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে যাচ্ছি, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি, ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি; যেন বাংলাদেশকে আর কখনো কেউ অবহেলা করতে না পারে। ’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতার ৯ মাসের মাথায় যে সংবিধান দিয়েছিলেন, তা-ই অক্ষরে অক্ষরে মেনে তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিত্সার ব্যবস্থা আমরা করেছি এবং এগিয়ে যাচ্ছি। ’

মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া এবং অনুষ্ঠানের আয়োজক মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যসচিব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ অনুষ্ঠানে বত্তৃদ্ধতা করেন।

অনুষ্ঠানে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের ওপর একটি অভিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন পরিবেশিত হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই আয়োজনে এর পরই থিম সং পরিবেশিত হয়।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্যরা, সরকারের পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের যাত্রা যদি আপনারা হিসাব করেন, বাংলাদেশ স্বাধীনের ৫০ বছর হলেও ২৯ বছর কোনো উন্নয়ন হয় নাই। কেবল পেছনে টানা হয়েছে। অথচ জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য যে সাড়ে তিন বছর কাল ক্ষমতায় ছিলেন, তখনই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে তুলে আনতে সক্ষম হন। আর ২১ বছর পর ছিয়ানব্বই সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন এ দেশের মানুষ কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া পায়। এরপর মূল উন্নয়নটা আসে গত ১৩ বছরে একটানা তিন মেয়াদে সরকারে থাকার কারণে। ’

দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই এ দেশের জনগণের প্রতি, তাঁরা বারবার ভোট দিয়ে আমাদের তাঁদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আর সে জন্যই ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করার সুযোগ পেয়েছি। ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ পেয়েছি। যদিও করোনার কারণে আমাদের অনুষ্ঠান সীমিত আকারে করতে হয়েছে। আমরা উদযাপনকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বাংলাদেশের ইতিহাস দেখি, সেই একাত্তর থেকে পঁচাত্তর সাল এবং পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের চরম আঘাত। তার পরে অন্ধকারের যাত্রা শুরু। বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তার স্বাধীনতার চেতনা, জয় বাংলা স্লোগান, ৭ই মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর নাম নিষিদ্ধ, ছবি নিষিদ্ধ। ২১ বছর এভাবে বাংলাদেশের বিজয়ের ইতিহাস পদদলিত হয় এবং অন্য ইতিহাস জানানোর চেষ্টা করা হয়। ইতিহাস কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আর সত্যের জয় হয়। এটা কেউ কখনো বাধা দিয়ে থামিয়ে দিতে পারে না। আজ সেটাই হয়েছে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আমাদের ইতিহাসের একটি সাক্ষী। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বাংলার জনগণ শেখ মুজিবকে মুক্ত করে আনার পর এখানেই বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে। বাঙালিকে মুক্তির সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণও তিনি দিয়েছিলেন এখানে (তত্কালীন রেসকোর্স ময়দান)। এখানেই পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এমনকি দেশ স্বাধীনের পর পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে দেশে ফিরে ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে দেশ গড়ার ভাষণও তিনি এখানেই দিয়েছিলেন। ’

জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ শুরু করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানাসহ ধানমণ্ডির বাড়ি। জাতির পিতা তখনই পূর্বপরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাটা প্রচার করেছিলেন। তত্কালীন ইপিআর, বর্তমান বিজিবির হেডকোয়ার্টার থেকে সুবেদার মেজর শওকত আলী তাঁর চারজন সঙ্গীসহ জাতির পিতার এই ভাষণ সারা দেশে ছড়িয়ে দেন। বিভিন্ন পুলিশ স্টেশনে টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টারের মাধ্যমে ২৫ মার্চ রাত এবং ২৬ মার্চ ভোররাতের আগেই সারা দেশে এই বার্তাটা পৌঁছে যায়।

তিনি বলেন, ২৬ মার্চ এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে তারা নিয়ে যায় পাকিস্তানে এবং বন্দি করে রাখে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়। তাঁকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

তিনি বলেন, ‘আজকে এই সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের পথ ধরেই আমরা এগিয়ে যাব এবং শতবর্ষ উদযাপন করবে আমাদের আগামী দিনের প্রজন্ম ২০৭১ সালে। তাদের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং আমাদের বর্তমানকে আগামী প্রজন্মের জন্য উত্সর্গ করে যাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি