1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক বিবাদ মেটাতে ভারত সহায়ক হতে পারে: রাশিয়া

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়ে দিলেন, রাশিয়া থেকে ভারত যা কিছু কিনতে চায়, তা নিয়ে আলোচনায় তাঁরা প্রস্তুত। ইউক্রেন সংকটের মধ্যে ভারতের অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসের আধার হলো বন্ধুত্ব। পশ্চিমা বন্ধুরা ইউক্রেন সংকটের জন্য অর্থবহ আন্তর্জাতিক গুরুত্বগুলোকে খাটো করে দেখতে চাইছেন।’

একই সঙ্গে লাভরভ বলেন, আন্তর্জাতিক বিবাদ মেটাতে ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও আন্তরিক দেশ সহায়ক হতে পারে।

লাভরভ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতে আসেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে শুক্রবার দুপুরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘ভারত আমাদের অবস্থান জানে। আমাদের লুকানোর কিছুই নেই। ইউক্রেন প্রশ্নে ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাস্তবতার ওপর নির্ভরশীল। সেই সিদ্ধান্ত তারা কোনো কিছুতে প্রভাবিত হয়ে নেয়নি। একতরফাভাবেও নেওয়া হয়নি। এটা প্রশংসার যোগ্য।’ তিনি বলেন, রাশিয়া বহু মেরুকৃত পৃথিবীর পক্ষে।

ইউক্রেন সংকট শুরুর পর এই প্রথম রাশিয়ার কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতার প্রথম ভারত সফর। চীন হয়ে তিনি ভারতে এসেছেন। জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর লাভরভ দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক বার্তা তিনি মোদির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বার্তার সারমর্ম কী, তা অবশ্য সন্ধ্যা পর্যন্ত জানানো হয়নি।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের শুরুতে জয়শঙ্কর ইউক্রেন প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট করে বলেন, মতানৈক্য ও বিবাদ সব সময় আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের সনদ, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক সংহতি মান্য করে শান্তিপূর্ণ আলোচনা ও কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে মেটানো প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রেও তা মেনে চলা জরুরি। তবে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন হিংসার অবসান। তার পর আলোচনা।

ইউক্রেন সংকটের অবসানে এই কথাই ভারত বারবার বলে আসছে। সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধাচরণ না করে, জাতিসংঘে এ-সংক্রান্ত বিষয়ে আনা বিভিন্ন প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকে ভারত যে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য পশ্চিমা রাষ্ট্র তা মেনে নিতে পারছে না। ভারতের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে সরাসরি রাশিয়ার বিরোধিতায় তাদের সঙ্গে হাত মেলাতে। এই চেষ্টার অঙ্গ হিসেবেই তারা চায়, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা মিত্রশক্তি যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ভারত তা মেনে চলুক।

লাভরভের সফর ও শুক্রবারের বৈঠকের একটা বিশেষ দিক ছিল এই নিষেধাজ্ঞাকেন্দ্রিক। খবর হলো, রাশিয়া অত্যন্ত সস্তায় তাদের দেশে উৎপাদিত অশোধিত তেল ভারতকে বিক্রি করতে আগ্রহী। পশ্চিমা গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে তেলের যা দাম, তার তুলনায় ব্যারেলপ্রতি ৩৫ ডলার কমে ভারতকে তেল বেচতে চায় রাশিয়া। তারা চায় ভারত তাদের কাছ থেকে অন্তত ১৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল কেনার চুক্তি করুক।

সোভিয়েত আমলে দুই দেশের বাণিজ্য ডলারের পরিবর্তে যেভাবে রুপি-রুবল আদান-প্রদান মারফত হতো, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়া সেই ব্যবস্থায় ফিরতে আগ্রহী। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে লাভরভ বলেন, ডলার-নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য বিস্তারের চেষ্টা রাশিয়া করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত যা কিছু কিনতে চায়, সব সরবরাহে রাশিয়া প্রস্তুত। এ নিয়ে আলোচনায় তাঁরা তৈরি।

ইউক্রেন বিবাদের অবসানে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রের খোঁজ মেলেনি। তুরস্কের মধ্যস্থতা কাজে আসেনি। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মোদি মধ্যস্থ হতে পারেন কি না জানতে চাওয়া হলে লাভরভ বলেন, ভারত এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আন্তরিক দেশ। দুই দেশের সঙ্গেই তার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা দুনিয়া যে দায়িত্বে অবহেলা করেছে, ভারত তা নিতে পারে। আন্তর্জাতিক বিবাদের ন্যায়সংগত ও যুক্তিপূর্ণ সমাধানে সহায়ক হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি