আবু তাহের বাপ্পা : লাইফ বীমা খাতের টাকা নয় ছয় হচ্ছে। বীমা খাতের উদ্যোক্তা পরিচালকগণ বা ব্যবস্থাপনা কমিটি ও পরিচালণা পর্ষদের যোগসাজুস্যেই এ খাতে নজিরবিহীন লুটপাটের ঘটনা ঘটে চলেছে। সম্প্রতি সময়ে কয়েকটি শীর্ষ স্থানীয় লাইফ বীমা কোম্পানী মহা কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নড়ে বাসার কথা থাকলেও তার বিপরীতে এক ধরণের রহস্যজনক নীরবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বরং কোন কোন কোম্পানীর দূর্নীতির রোধে প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার নামে সেখনে নতুন মাত্রার লুটপাটের তথ্য আসতে শুরু করেছে ।
তথ্য অনুসন্ধ্যানে লাইফ বীমা খাতের অর্থ লোপাটের পেছনে দীর্ঘ সময়ের ইল মোটিভের সন্ধ্যান মিলেছে। সেই সাথে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অদক্ষতা অদূরদর্শিতা এবং সহজ উপায়ে বেহিসেবি অর্থের মালিকবনে যাওয়ার সুযোগ থাকায় এখানে প্রশ্নাতীতভাবে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়ে গেছে।
বীমা খাতের বিশেষ করে লাইফ বীমা খাতের দূর্নীতি ও অর্থের নয় ছয়ের অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন তৈরীর প্রথম ধাপে দেখা যাচ্ছে পলিসি সংগ্রহের একেবারেই প্রাথমিক ধাপেই দূর্নীতির ”ইল মোটিভটি” স্পষ্ঠ্য রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও সে মোটিভ দূর করতে কোন প্রকার উদ্যোগই নেয়নি সরকারে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বা এরও পরে এসে প্রতিষ্ঠিত বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআর এ। বিশ্লেষণ ও তথ্য অনুসন্ধ্যানে দেখা যায়, একজন বীমা গ্রাহক যখন একটি পলিসি গ্রহণে রাজি হন বা মনস্থির করেন তখন দেখা যায় সে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন একজন নন প্রফেশনাল কমিশন এজেন্ট দ্বারা। যিনি বীমা পলিসি গ্রহণ করছেন বা যিনি করাচ্ছেন তারা কেউই পলিসি বা অর্থের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানেন না। একজন লাইফ বীমার মাঠ কর্মিকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন ভাবেই জানাতে পারেন না যে বীমার টাকা যে কয়েক বছর পর দ্বিগুন বা চারগুন বেশী হয়ে ফেরত দেয়ার কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়টি আইনের কোন ধারা উপধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। বা কোম্পানীটি যে টাকা ফেরত দিতে চায় সে কিভাবে দেবে। কোন ব্যবসায় এ টাকা বিনিয়োগ হবে? এর কোনটারই সঠিক উত্তর নেই তাদের হাতে।
এ দিকে একজন এজেন্ট বা কমিশণ ভোগী দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বীমা পলিসি গ্রহণের পর কিছুদিন টাকা জমা করার পর সে কমিশন এজেন্ট যখন কোম্পানী ছেড়ে চলে যান তখন যদি বীমা গ্রহিতা আর সে ব্যাপারে খোঁজ খবর না রাখেন তখন সে টাকা বা পলিসিটি আনক্লেইড হয়ে যায়। এ টাকার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানেনা অনেকেই।
সংশ্লিষ্ট তথ্য ঘেটে দেখা যাচ্ছে, আনক্লেইমড টাকা কোম্পানীর একাউন্টেই থেকে যায় এবং এক সময়ে এটা কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিষদ তাদের নিজেদের অর্থ মনে করে নিজেদের মাঝে ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে নানা পথ খুঁজে বের করে। এক সময়ে তারা সমন্বয়ের নামে নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের নামে বেনামে গড়ে তোলা কোম্পানীতে টাকা সরিয়ে নেয়। যা আর কখনো মূল কোম্পানীতে ফিরে আসে না। এ ভাবেই লাইফ বীমার টাকা দীর্ঘ বছর ধরে লুটপাট হয়ে আসছে।
এ ছাড়া সাধারণ বীমার ক্ষেত্রে দেশে বা বিদেশে পুন;বীমার একটি ব্যবস্থা চালু থাকলেও জীবন বীমার ক্ষেত্রে এমন কোন ব্যবস্থা নেই বলে জানা গেছে। এসব কারণে অনেকটাই ওপেন সিক্রেট লুটপাটের খাত হয়ে উঠেছে লাইফ বীমা কোম্পানী গুলো।