হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ কঠোরভাবে দমন করা নিরাপত্তা বিভাগের সাবেক প্রধান, জন লি হচ্ছেন অঞ্চলটির নতুন নির্বাহী। ক্যারি লামের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন ৬৪ বছর বয়সি এই চীনপন্থি নেতা।
আজ রবিবার হংকংয়ের বাসিন্দাদের কোনরকম অংশগ্রহণ ছাড়াই বেইজিংপন্থীদের একটি ইলেকশন কমিটি গোপন ভোটাভুটির মাধ্যমে তাকে নির্বাহী হিসেবে বেছে নেয়।
ভোটাভুটিতে একমাত্র প্রার্থী ছিলেন জন লি। ১ হাজার ৪১৬ সদস্য বিশিষ্ট ইলেকশন কমিটির ৯৯ শতাংশই জন লিয়ের পক্ষে ভোট দেন, আর ৮ জন ভোট দেন বিপক্ষে। তাকে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচন করা হয়েছে এবং এটি হংকংয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিচয় বলে দাবি করেছে বেইজিং। যদিও ইলেকশন কমিটির সদস্য সংখ্যা হংকংয়ের জনসংখ্যার প্রায় শূণ্য দশমিক শূণ্য দুই শতাংশ। চীনের কট্টরপন্থি সমর্থক হওয়ায় হংকংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে জন লির জনপ্রিয়তা তেমন একটা নেই। তিনি ক্ষমতা নেয়ার পর হংকংয়ে চীনের কব্জা আরও বিস্তৃত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জন লি জানান, হংকংয়ে গভীর সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। হংকংয়ের সম্ভাবনাকে বিকশিত করতে চীনের মূল ভূখণ্ড ও বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনেও কাজ করবেন তিনি।
৬৪ বছর বয়সী সাবেক এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে, এখন আর অপেক্ষা করার সময় নয়। আমাদের আন্তর্জাতিক শহর হিসেবে হংকংকে একীভূত করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, হংকংয়ে নিরাপত্তার দিকে মনোনিবেশ করতেই তাকে ক্ষমতায় বসাচ্ছে বেইজিং। তিনি আগামী ১ জুলাই থেকে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন শুরু করবেন। হংকং ১৯৯৭ সালে সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে চীনে যুক্ত হওয়ার পর, পাঁচ বছর পর পর অঞ্চলটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। অঞ্চলটির বর্তমান প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ক্যারি লাম। গত ৫ মে থেকে নিজের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন এ নেতা।
জন লি বেইজিংয়ের অত্যন্ত অনুগত দেশপ্রেমিক হিসেবে চিহ্নিত। তিনি ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ দমনের কারিগর হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। সে সময় টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট দিয়ে বিক্ষোভকারীদের মোকাবেলা করার প্রচারাভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার দায়িত্বে এ সময় অসংখ্য গণতন্ত্রপন্থীকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
২০১৭ সালে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী নির্বাচিত হন ক্যারি লাম। ১ হাজার ১৯৪টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ৭৭২ ভোটের মাধ্যমে তার জয় সুনিশ্চিত হয়। তার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল।