দেশের রফতানি আয়ে নতুন রেকর্ড হয়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত) রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল বাংলাদেশ, যা ছিল এক অর্থবছরে রফতানির রেকর্ড। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই সেই রেকর্ড ভেঙে রফতানি খাতের নতুন রেকর্ড হলো।
করোনা মহামারির ভয়াবহ অবস্থা থেকে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন আগের অবস্থায় ফেরায় গার্মেন্টস পণ্যের রফতানি বেড়েছে। সার্বিকভাবে গত এপ্রিলে দেশে রফতানি আয় ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
আজ সোমবার (৯ মে) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে জুলাই থেকে এপ্রিল, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার ২ মাস আগেই রফতানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের দশম মাস এপ্রিলে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ৪৭৩ কোটি ৮৭ লাখ (৪.৭৪ বিলিয়ন) ডলার বিদেশি মুদ্রা এনেছেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-এপ্রিল সময়ে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৩৫ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই খাত থেকে আয় বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ।
গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি রফতানি আয় দেশে এসেছে। এ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি এসেছে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অর্থবছরের হিসাবে ১০ মাসে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন রফতানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল) চেয়েও ১২ শতাংশ বেশি।
রফতানির এই ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এবার রফতানি আয় ৫২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে রফতানি বাণিজ্যে ইতিহাস সৃষ্টি করবে বাংলাদেশ। অর্থবছরের বাকি দুই মাসেও (মে ও জুন) এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন রফতানিকারকরা।
এপ্রিল মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৩৩৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত বছরের এপ্রিলে পণ্য রফতানি থেকে ৩১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলার আয় হয়েছিল। ১০ মাসের হিসাবে সার্বিক রফতানি আয় বেড়েছে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি এসেছে ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ।
একক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে এপ্রিল মাসের এই আয় চতুর্থ সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি এসেছিল গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ৪৯০ কোটি ৭৭ লাখ (৪ দশমিক ৯০ বিলিয়ন) ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসেছিল চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার (৪ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন) ডলার। মার্চে এসেছিল ৪৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ৪২৯ কোটি ৪৫ লাখ (৪ দশমিক ২৯ বিলিয়ন) ডলার।