কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় ফসলের মাঠগুলোতে পানি জমে পাকা ধান নষ্ট হয়ে ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের। এখনও ৫৫ শতাংশ বোরো ধান কৃষকের জমিতে, যার অধিকাংশই কাটার উপযোগী। এর মধ্যেই বৃষ্টির বাগড়া। জমিতে পানি থাকায় ধান কাটতে শ্রমিকরা অনীহা প্রকাশ করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে একটি পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১৯ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকরা জানান, বৈরী আবহাওয়া বোরো ধানের জন্য খুব একটা ভালো না হলেও খারাপ ছিল না। কিন্তু শেষ সময়ে ঝড়-বৃষ্টির বাগড়া। এতে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে যাওয়া এক বিঘা জমির ধান কাটার জন্য শ্রমিকদের ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে। কেটে রাখা ধানে পানি জমে আছে, আবার শ্রমিক সংকটে বেশি সময় ধরে পানি জমে থাকায় ধান থেকে বের হয়েছে চারা। যার ফলে ধানের রঙ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন।
বামন গ্রামের কৃষক তীর্থ সলির রুদ্র জানায়, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মাঠের ধানের জমিতে জলাবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতি বিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক বেশি লাগবে। আগে যেখানে এক বিঘা জমিতে খরচ হতো তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। সেখানে এখন অতিরিক্ত খরচসহ প্রায় সাত হাজার টাকা লাগছে।
কৃষকরা জানান, অনেক কৃষকের জমিন ধান ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে। এখন ধান কাটা মানে শুধু কৃষকের মনে শান্তনা দেওয়া। এবার বোরো ধান চাষ করে কৃষকদের কিছুই থাকবে না। আমারই এমন হয়েছে তা নয়। বেশিরভাগ কৃষক বোরো ধান চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
কৃষক রাজু আহমেদ জানান, এ বছর এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। বর্তমানে শ্রমিক খরচ আরও প্রায় তিন হাজার টাকা বেড়ে ছয় হাজারে ঠেকেছে।
জানতে চাইলে নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আদনান বাবু জানান, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের নানা দিক নির্দেশনা দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করেছেন। আর ঝড়-বৃষ্টিতে ধান গাছ পড়ে গিয়ে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা। তবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি। যত দ্রুত সম্ভব পাকা ধান কাটতে হবে।