জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরে নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে গত ১৮ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক দুই উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও এ কে এম নূর-উন-নবীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলায় শেখ হাসিনা ছাত্রী হল ও ড. ওয়াজেদ মিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ভবন নির্মাণে প্রায় ৪ কোটি টাকার অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। তার আগে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক এ কে এম নূর-উন-নবী। মামলার অন্য আসামিরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আবদুস সালাম বাচ্চু এবং এম এম হাবিবুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘পরস্পরের যোগসাজশে, বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উন্নয়ন প্রকল্পে অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করা হয় এবং ৩০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই সম্পাদন করা হয়েছে।
এছাড়া ঠিকাদারের চলতি বিল থেকে কাটা নিরাপত্তা জামানত এফডিআর (স্থায়ী আমানত) হিসেবে ব্যাংকে জমা রেখে, সেই এফডিআরকে লিয়েনে দিয়ে ঠিকাদারকে ঋণ দিতে ‘না-আপত্তি সনদ’ প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় তথা সরকারের প্রায় চার কোটি টাকা সরাসরি ঠিকাদারের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করা হয়। এছাড়া, চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার কোনো বিধান না থাকলেও ‘আর্থিক সহযোগিতা’র অজুহাতে ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে ঠিকাদারকে অগ্রিম বিল দেওয়া হয়। এমনকি, সেই অগ্রিম বিলের বিপরীতে নেওয়া গ্যারান্টিগুলোর সমন্বয় না করেই তা অবমুক্ত করে দেওয়া হয়।
এছাড়া, প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত নকশা ও পরিকল্পনা উপেক্ষা করে সরকারি ক্রয়বিধি অনুসরণ না করে দ্বিতীয় একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া, দরপত্রে অস্বাভাবিক মূল্যদানের (ফ্রন্ট লোডিং) বিষয়টি থাকা সত্ত্বেও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর), ২০০৮ অনুযায়ী সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করেই কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
Add Comment