আজ ৭ জুন ২০২২ রোজ বুধবার বেলা ৩ ঘটিকার সময় বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ কর্তৃক আয়োজিত ফায়ার সার্ভিস কে আধুনিকায়ন ও চট্টগ্রাম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবিতে এক নাগরিক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৩৯-৪০ সালে ব্রিটিশ সরকার যে দমকল বাহিনীর সৃষ্টি করেছিল তা আজ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর নামে পরিচিত। স্বাধীনতার পরবর্তী তে এই প্রতিষ্ঠানকে জননিরাপত্তায় বিগত দিনগুলিতে খুব বেশি মানোন্নয়ন করা হয়নি। যদিও গত কয়েক বছর যাবৎ সরকার দেশের উপজেলা ও শিল্প এলাকা সমূহে কিছু স্টেশন স্থাপন করাসহ কিছু যন্ত্রপাতি এবং ফায়ারফাইটের বেতন কাঠামোতে সামান্য পরিবর্তন সাধন করেছে। কিন্তু দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারিভাবে ভৌত অবকাঠামো শিল্প বিপ্লব এর সাথে সাথে জননিরাপত্তায় ফায়ার সার্ভিসের যে ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকায়ন করার জন্য যা করা প্রয়োজন ছিল তা যে হয়নি বিগত কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ট্রাজেডি এবং উদ্ধার তৎপরতা পর্যালোচনা করলেই প্রতীয়মান হবে। বিশেষ করে রানা প্লাজা, নিমতলী ,চুড়িহাট্টা, তাজরিন ফ্যাশন, নদীর মাঝখানে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড এবং গত শনিবার ঘটে যাওয়া কন্টেইনার ডিপো তে ঘটে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড যেখানে অগ্নুৎপাত আজও চলমান রয়েছে। ফায়ার ফাইটার দের যেখানে ২৪ ঘন্টা তৈরি থাকতে হয় যেকোনো দুর্ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য অথচ তাদের জীবনিরাপত্তার জন্য নেই পর্যাপ্ত ঝুঁকি ভাতা, নেই আকাশ থেকে নিক্ষেপ করার কোন গ্যাস বা পানি ফেলার হেলিকপ্টার বা বিমান। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নেই তাদের কোন বিশেষ প্রশিক্ষণ। অনেক ফায়ার ফাইটার দেব শারীরিক ফিটনেস না থাকলেও তারা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে এই জন্য পর্যাপ্ত ফিটনেস ব্যবস্থাও করা হয় না।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আরও অনেক বক্তারা বলেন যেভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল মাতারবাড়ি, কর্ণফুলী টার্মিনাল, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু সহ হাই রাইজিং বিল্ডিং যেভাবে হচ্ছে আল্লাহ না করুক যদি বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে দেশের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
আমাদের দাবি
১। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিকায়ন করতে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার বিমান সহ সকল ধরনের যন্ত্রপাতি প্রদান করতে হবে।
২। ফায়ারফাইটের উন্নত আধুনিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা। এবং ফায়ারফাইটের দের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ফিটনেস দেখভাল করতে হবে।
৩। প্রয়োজনে বেতন-ভাতা বা ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৪। ফায়ার সার্ভিসের নিয়োজিত সকল কর্মী এবং বেসরকারি শ্রমিক কর্মচারী যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৫। কন্টেইনার ডিপো কে সরকারি ভাবে অধিগ্রহণ করে এবং প্রতিষ্ঠানের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আহত ও নিহত পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন করতে হবে।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নারী আন্দোলনের সভানেত্রী মিতা রহমান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ শাজাহান, শেখ ফরিদ, লোটাস জামিল প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে হতাহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া করেন বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোঃ একরামুল হক।