1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

রফতানি বন্ধ হলে আমও যাবে ছালাও যাবে : প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

বেতন বাড়ানোর দাবিতে সড়কে নেমে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে আন্দালন না করতেও শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৭ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শ্রমিকদের প্রতি এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় অংশ নেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম সামনে আরও কত বাড়বে তার ঠিক নাই। এ অবস্থায় কারও কথায় আন্দোলন করলে রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে। রফতানি যদি বন্ধ হয়, তাহলে পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আমও যাবে, ছালাও যাবে। বেতন আর বাড়বে না, তখন চাকরিই চলে যাবে। ঘরে ফিরে যেতে হবে। তখন কী করবে?’

গ্রামের মানুষ ভালো আছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন আগে দেখতে পাচ্ছি গার্মেন্ট শ্রমিকরা আন্দোলন করে। আন্দোলন করে কারখানা ও কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলেতো চাকরি চলে যাবে।

তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য রফতানির বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কয়েকদিন আগে দেখতে পাচ্ছি গার্মেন্ট শ্রমিকরা আন্দোলন করে। আন্দোলন করে, ঠিক আছে। কিন্তু যেসব দেশ আমাদের তৈরি পোশাক কিনবে, আমরা ভালো সুবিধা পাচ্ছি। উৎপাদন বাড়ছে। এই সমস্ত শ্রমিকদের বেতনতো বন্ধ হয়নি। আমরাতো নিজেরা প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি, টাকা দিয়েছি। ভর্তুকি দিয়ে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যাতে বেতনটা সরাসরি পায়, সেই ব্যবস্থাটা করেছি। সরাসরি ফোনের মাধ্যমে টাকা দিয়েছি। মালিকদের হাতে তো দেইনি।

‘আজকে বেতন বাড়া, এটা সেটাসহ নানা ধরণের আন্দোলন করতে যায়। এই রফতানি যদি বন্ধ হয়, তাহলে পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন ‘আমও যাবে, ছালাও যাবে’। বেতন আর বাড়বে না, তখন চাকরিই চলে যাবে। ঘরে ফিরে যেতে হবে। তখন কি করবে? যে নেতারা উস্কানি দিচ্ছেন, তারা কাদের প্ররোচণায় দিচ্ছেন তাও ভেবে দেখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি খুব খোলাখুলি বাস্তব কথাটাই বললাম। কারণ যারা কিনবে ক্রয় ক্ষমতাও নেই। ক্রয় ক্ষমতাও সীমিত হয়ে যাচ্ছে। দিনে দিনে আরও খারাপ হচ্ছে। আমরা আমেরিকা, ইউরোপসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠায়। প্রত্যেক জায়গায় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সেখানে মানুষ দুরাবস্থায় আছে, কত মানুষ না খেয়ে তিন কাটাচ্ছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশে সকলের খাদ্য, টিকা, ওষুধসহ সব কিছু দিয়ে যেতে পারছি।

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করলে, আমি বলবো শেষে এ কূল, ও কূল, দু কূল হারাতে হবে। এটাও সবাইকে মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাস আওয়ামী লীগ সরকারের আসার পরেই দেশে স্থিতিশীলতা এসেছে।

সরকারপ্রধান বলেন, আজকে আমরা আন্দোলন, সংগ্রাম, জেল-জুলুম যাই ভোগ করি না কেন, দেশে স্থিতিশীলতা আমরাই আনতে পেরেছি। তারপরেও বার বার প্রচেষ্টা, কি? আমাদের সরকারকে উৎখাতই করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এই প্রথম ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নীতি হয়েছে। এ সময় ক্ষমতায় থেকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ দেওয়ার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। ওইসব দেশে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইংল্যাণ্ডের মানুষ তিন বেলা খেতো, এখন একবেলা খাবার বাদ দিয়েছে। তাদের সীমিত আকারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে, ভোজ্যতেল এক লিটারের বেশি কেউ কিনতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশে ভর্তুকি দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে তুলেছিলাম। সেই টাকা ভেঙে ভেঙে বিদ্যুৎ, গ্যাস, কৃষি ও স্বাস্থ্যের জন্য ভর্তুকি এবং সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। কারণ এইভাবে কোনো দেশ করেনি।

বিনামূল্যে করোনা টিকা ও করোনা পরীক্ষা করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারপরেও কেউ যদি গোলমাল করার চেষ্টা করে, তাহলে এই দেশটা একেবারে স্থবির হয়ে যায়, সাধারণ মানুষের কি অবস্থাটা হবে?

শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামের মানুষের অবস্থা এখনো অনেক ভালো আছে। সেটা যাতে ভালো থাকে, সেইদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। যে কারণে আমি আহ্বান করেছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কারণ বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভাব, খাদ্য মন্দা। সেখানে আমাদের নিজের মাটির আছে, মানুষ আছে, ফসল ফলাতে হবে। নিজের খাবারের ব্যবস্থাটা অন্তত আমরা নিজেরা করবো।

সবাইকে মিতব্যয়ী ও খাদ্য অপচয় না করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবতো আর সরকার করতে পারবে না। নিজেকেও করতে হবে। এটা আমি আমাদের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে বলবো।’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাড়াতাড়ি থামবে বলে মনে করেন না প্রধানমন্ত্রী। এ কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ার কথা জানান তিনি। বলেন, ‘জিনিসের দামতো বাড়বেই।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি